দখল-দূষণে মৃতপ্রায় সুবর্ণখালী নদী

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় সুবর্ণখালী নদী
সুবর্ণখালী নদীর বুকে বাঁধ। ছবি: শহিদুল ইসলাম নিরব/স্টার

নদীর মুখে বাঁধ, দখল ও দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সুবর্ণখালী নদী। ঐতিহ্যবাহী এ নদীটি শিমলা বাজারের চম্পাকলি সিনেমা হল থেকে শুরু হয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের দিকে প্রবাহিত হয়েছে।

অবৈধ দখল, পলি জমা ও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। নদীর মুখে একাধিক বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পানির প্রবাহ।

যখন সরিষাবাড়ীতে বেশ কয়েকটি পাটকল ছিল, তখন এই নদীতে পাট বহনকারী হাজার হাজার নৌকার ভিড় লেগে থাকত। সুবর্ণখালীই ছিল সে সময়ের জামালপুরের প্রধান নদী।

ছবি: শহিদুল ইসলাম নিরব/স্টার

তবে পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, নদীর মুখে বাঁধ দিয়ে এর প্রবাহ আটকে দেওয়া হয়। শুরু হয় নদী ভরাট, তীর দখল ও দূষণের কর্মযজ্ঞ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির অভাবে প্রভাবশালীরা নদীর তীর দখল করে গড়ে তুলেছে অবৈধ স্থাপনা।

সম্প্রতিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সুবর্ণখালী নদীর পাড় ভরাট করে বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক ও একটি বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকি নদী ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রিও করা হচ্ছে।

এ ছাড়া, আরামনগর বাজার ও শিমলা বাজার এলাকার প্রায় সব ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলে একে দূষিত ও ভরাট করা হচ্ছে।

পৌর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদী দখল থেকে রক্ষা পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। এখন দখলদারদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে।'

ছবি: শহিদুল ইসলাম নিরব/স্টার

সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল হক তরফদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একসময় এ নদী খুব স্রোতস্বিনী ছিল। অনেক নৌকা চলাচল করত। নদীর মুখে বাঁধ দিয়ে নদীটিকে হত্যা করা হয়েছে। দখল-দূষণে নদীটি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা নদীটিকে আবার আগের মতো দেখতে চাই।'

সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন পাঠান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুবর্ণখালী নদী দখল ও দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অনেক আগেই জানানো হয়েছে। তবে কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।'

সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদীটি দূষণ ও দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দখলদারদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Public Service Act: Ordinance out amid Secretariat protests

The government last night issued an ordinance allowing dismissal of public servants for administrative disruptions within 14 days and without departmental proceedings.

7h ago