খুমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে, বন্ধ ওষুধের দোকান

খুমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। ছবি: স্টার

খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় হামলাকারীদের আটকের দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

গত সোমবার রাত ১০টা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসরা এই কর্মবিরতি শুরু করেছেন। দোষীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা গেছে, মেডিকেল কলেজ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে বারান্দায় ও হাসপাতাল চত্বরে ঘোরাফেরা করছেন।

এসময় প্রায় ২০০-৩০০ শিক্ষার্থী মিছিল করে প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পার হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে সোনাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আমাদের ওপরে ওষুধ ব্যবসায়ীরা আক্রমণ করল কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো না।'

'আমরা আমাদের এই কর্ম বিরতি চালিয়ে যাব যতক্ষণ না পর্যন্ত দোষীদের গ্রেপ্তার উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চয়তা পাই', বলেন তিনি।

খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. দীন-উল-ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।'

এ ঘটনা নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্যের মধ্যস্থতায় একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. অধ্যাপক মেহেদী নেওয়াজ বলেন, 'ওষুধের দাম বেশি রাখার প্রতিবাদ করায় আমাদের শিক্ষার্থীদের খুব বাজেভাবে মারা হয়েছে। আমরা আজ এমপি মহোদয়ের সাথে বসে বিষয়টা ফয়সালা করার চেষ্টা করব।'

এদিকে হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকানের এখনো বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধের পাশাপাশি ওষুধের দোকানও বন্ধ থাকায় রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

খুলনার ডুমরিয়ার খর্নিয়া গ্রাম থেকে ৮ বছরের কন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন মুজিবুল হক। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকেট কেটেও চিকিৎসা পাননি তিনি। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

মুজিবুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকালে এসে দেখছি অবস্থা খারাপ, শিক্ষার্থীরা মিছিল করছে। যেকোন সময় খারাপ কিছু হতে পারে তাই এখান থেকে চলে যাচ্ছি।'

সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক বলেন, 'পরিস্থিতি সামাল দিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ সামনের সব ওষুধের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা দুই পক্ষের সাথে কথা বলেছি। মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমান এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।'

উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনের মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্ণারে এক মেডিকেল শিক্ষার্থী কিছু ওষুধ কিনতে যান। সেখানে ওষুধের মোট মূল্য হয় ৭০ টাকা। কিন্তু ওই ৭০ টাকার ওষুধে শতকরা ১০ টাকা কমিশন দিয়ে ৬৩ টাকা রাখার অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু ৭০ টাকার ওষুধে কোনো কমিশন নেওয়ার সুযোগ নেই জানালে এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও বিক্রেতার মধ্যে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

Comments

The Daily Star  | English

Voting in Ducsu election starts

Students started casting their votes at 8:00am across polling centres set up in residential halls amid tight security. The balloting will continue until 4:00pm.

1h ago