পুরোনো সামগ্রী দিয়ে রাস্তা মেরামত, প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের গায়ে হাত তুললেন প্রকৌশলী

পুরোনো সামগ্রী দিয়ে রাস্তা মেরামত নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপে গিয়ে চড়াও হন ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল (হেলমেট পরা)। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া/স্টার

রাস্তা মেরামতে পুরোনো ও পরিত্যক্ত নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করেছেন শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল। সাংবাদিকদের গায়ে হাত তুলে তিনি তাদের হুমকিও দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাস্তা মেরামতের খবর সংগ্রহে যাওয়া তিন জন সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলেন প্রকৌশলী নাবিল। 

ডামুড্যা উপজেলার খেজুরতলা এলাকায় রাস্তায় এই ঘটনাটি ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা থেকে তুলে আনা পুরোনো পাথর এবং একটি পুরোনো সেতু থেকে সংগ্রহ করা ভাঙা পাথরের সঙ্গে বিটুমিন মেশানো হচ্ছে। রাস্তা কারপেটিংয়ে পুরোনো উপকরণ ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে প্রকৌশলী নাবিল সাংবাদিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করেন।

তিনি বলেন, 'তোরা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কী বুঝস, তোরা কারা? তোদের পড়াশোনার যোগ্যতা কী? গেট লস্ট।'

এক পর্যায়ে তিনি এক সাংবাদিককে ধাক্কা দেন।

এ সময় ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি প্রকৌশলীকে বলেন, 'আপনি গায়ে কেন হাত দিচ্ছেন, আর তুই তোকারি কেন করছেন।'

এ কথার জবাবে তিনি বলেন, 'কই হাত দিয়েছি, বরং তুই আমার গায়ে হাত দিয়েছিস। আর তুই কে? তোর পরিচয় কী? তোরে গাইরালাইমানে (পুতে ফেলব)। আমার গায়ে কেন হাত দিলি তোরে গাইরালাইমানে।'

এই কথা বলে তিনি ডেইলি স্টারের প্রতিবেদকের গায়ে হাত তোলেন এবং ধাক্কা দেন। 

এ সময় ঠিকাদার মোহাম্মদ ইয়ামিন প্রকৌশলীকে বাধা দেন।

প্রকৌশলী আরও বলেন, 'তোদের পরিচয় কী, আমার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় টিভি চ্যানেলের চিফ রিপোর্টার, তার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও হাত আছে। এখনই তোর পরিচয় বল, তারে সব জানাইতাছি।'

এলজিইডির জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আমাদের পরিচয় জানেন, বলা হলে প্রকৌশলী নাবিল বলেন, 'আমার মন্ত্রী-সচিব আছে, জেলা এক্সেন আমার গোনা লাগে না, তারে আমি গুনি না, বোঝোস নাই ব্যাপারটা।'

পুরোনো উপকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে, ঠিকাদার রাজন বেপারী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুরোনো যেসব উপকরণ রাখা হয়েছে, সেগুলো আমার নয়। অন্য ঠিকাদার রেখে গেছেন।'

বিষয়টি নিয়ে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বেগম সেতুর সঙ্গে আলাপ হলে তিনি বলেন, 'বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। তিনি কেন এই ধরনের ব্যবহার করেছেন আমি জানি না। আমাকে সময় দিন তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করব কেন তিনি এ ধরনের ব্যবহার করেছেন।'

উপজেলা প্রকৌশলীর এমন আচরণ ও রাস্তায় পুরোনো নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কার্পেটিংয়ে পুরোনো মাল নতুন করে বিটুমিনে মেলানোর কোনো সুযোগ নেই। কার্পেটিংয়ের পুরোনো মাল রাস্তা থেকে উঠানোর পর রোলার দিয়ে রাস্তাতে মিলিয়ে ফেলতে হবে।'

'তিনি (উপজেলা প্রকৌশলী) বাজে ব্যবহার কেন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলব। আমি তাকেসহ আপনাদের একসঙ্গে ডাকব। আর তিনি যদি দোষী হয়ে থাকেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন নির্বাহী প্রকৌশলী।

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Reducing US trade GAP: Dhaka turns to Boeing, wheat imports

Bangladeshi officials are preparing for a third round of talks in Washington next week

10h ago