চট্টগ্রামে ‍৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে সম্মিলিত সনাতনী সমাজের ৭ দিনের আল্টিমেটাম

চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

মন্দির-হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ, খুলনায় উৎসব মন্ডলের ওপর হামলা এবং আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় নিরাপত্তাসহ ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত সনাতনী সমাজ-বাংলাদেশ। 

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের জামাল খান মোড়ে এ সমাবেশ হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে উত্থাপিত ৮ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য দাবি তোলা হয় সমাবেশ থেকে। দাবিগুলো বাস্তবায়নের ঘোষণার জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

দাবিগুলো হলো সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্তদের যথাপোযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করার পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টিকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, 'দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন' যথাযথ বাস্তবায়ন করা, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা রুম বরাদ্দ করা, সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন করা ও শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটি ঘোষণা করা।

সমাবেশে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও শহরের ওয়ার্ডগুলো থেকে সনাতনীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সনাতনী সমাজ-বাংলাদেশের অন্যতম মুখপাত্র ও পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। 

বক্তারা বলেন, 'বাংলাদেশে সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সনাতনীদের ভাগ্যবদল হয় না। কোনোকিছু হলেই সনাতনীদের ওপর হামলা হয়। তাদের বাড়িঘরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়। কিন্তু ৫৩ বছরে এদেশে কোনো সরকার সনাতনীদের ওপর হামলার বিচার করেনি। সনাতনীদের ওপর হামলার বিষয়ে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তার কারণে হামলকারীরা উৎসাহিত হয়। সনাতনীদেরকে সবসময় রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব বিষয় থেকে সনাতনীরা মুক্তি পেতে চান।'

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, '৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা মনে করেছিলাম একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা পাব। কিন্তু ৫ আগস্টের পর দেশের ৪৯টি জেলায় সনাতনীদের বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে।  প্রথম আলোর সংবাদ অনুযায়ী ৫ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১০৬৮টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপরও বিভিন্ন স্থানে ঘটনা ঘটেছে। যদিও এর সংখ্যা আরও বেশি। তাহলে এসব ঘটনা যদি ঘটে থাকে তবে ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন?'

বক্তারা আরও বলেন, 'আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে সনাতনীরা আতঙ্কিত। সুন্দরভাবে সনাতনীদের এই সর্ববৃহৎ উৎসব উদযাপনের জন্য বৃহত্তর পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। এ ছাড়া দুর্গাপূজায় ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে সরকার এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। ঘোষণার বিষয়ে আমরা জানতে চাই। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও বাড়িঘর সরকারিভাবে মেরামত ও সংস্কার করতে হবে। এ ছাড়া যারা নিহত হয়েছে তাদের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আগামী ১ মাস দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, পাড়া ও মহল্লায় ৮ দফা দাবির সমর্থনে গণসংযোগ হবে। দুর্গাপূজার আগে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। '

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

1h ago