পুণ্যস্নানে শেষ হলো রাস উৎসব

কুয়াকাটায় পুণ্যস্নানরত পুণ্যার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

কুয়াকাটা ও সুন্দরবনের দুবলা চরে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব। ভগবান কৃষ্ণের কাছে প্রার্থনার মাধ্যমে শনিবার ভোরে সূর্যোদয়ের আগে জোয়ারের পানিতে স্নান করে তিন দিনের এই উৎসবের ইতি টানেন পুণ্যার্থীরা।

১৫০ বছরের পুরনো এই উৎসব এ বছর শুরু হয় গত ১৪ নভেম্বর। এতে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে নৌকা, লঞ্চ ও ট্রলারে করে পুণ্যার্থীরা কুয়াকাটা ও দুবলার চরে আসেন।

ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, প্রার্থনা ও নৈবেদ্যের মাধ্যমে উৎসব সম্পন্ন হয়। ছবি: সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, প্রার্থনা ও নৈবেদ্যের মাধ্যমে এই উৎসব শুরু হয়। শুক্রবার মূল পূজা ও মানত পরিশোধ করেন পুণ্যার্থীরা।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে কুয়াকাটার রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে ভগবানকে আমন্ত্রণ, মঙ্গলঘট স্থাপন, সন্ধ্যা আরতি, আলোচনা সভা, সঙ্গীতানুষ্ঠান, ভাগবত পাঠ, মহানাম কীর্তন ও ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণসহ রাতভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মাদারীপুর থেকে কুয়াকাটার রাসমেলায় আসা পুণ্যার্থী সুশীল শীল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছরের রাসমেলায় আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। আমরা নির্বিঘ্নে সব সম্পন্ন করতে পেরেছি।'

দুবলার চরের রাসমেলায় আসা পুণ্যার্থী রীতা রানী দাস উৎসবের নিরাপত্তা ও সাফল্যের জন্য বন বিভাগসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।

রীতা বলেন, 'এবারের রাস উৎসব কেবল আমাদের ঐতিহ্যকেই সমুন্নত রাখেনি, সুন্দরবন ও পুণ্যার্থীদের মধ্যকার আধ্যাত্মিক বন্ধনকেও আরও জোরদার করেছে।'

সুন্দরবনে রাস উৎসবে আসা পুণ্যার্থীদের লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

রাস উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু শান্তু জানান, এবারের উৎসবে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে।

তিনি বলেন, 'এবারের উৎসবে হাজারো পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে। শনিবার ভোরে জোয়ারের সময় পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরই নৌকা ও ট্রলারে করে পুণ্যার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের গন্তব্যে ফিরে যাওয়া শুরু করেন।'

দুবলা চরে পুণ্যস্নানরত পুণ্যার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম এই উৎসবের সুশৃঙ্খল কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'এবারের রাস উৎসব বেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। পুণ্যার্থীরা সব নির্দেশনা মেনে শ্রদ্ধার সঙ্গে তাদের অনুষ্ঠান এবং প্রার্থনা পরিচালনা করেছেন।'

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

12h ago