হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের মাধ্যমে দিল্লির আধিপত্যবাদ মোকাবিলার আহ্বান জাতীয় নাগরিক কমিটির

জাতীয় নাগরিক কমিটির বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে বাংলাদেশ মিশনে হামলা এবং বাংলাদেশের পতাকাকে অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তারা হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের মাধ্যমে ভারতের আধিপত্যবাদ মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন।

বক্তারা বলেন, 'বাংলাদেশের ওপর দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে। বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি রয়েছে। কিন্তু ভারত সরকার "সাম্প্রদায়িক" ইস্যু বানিয়ে বাংলাদেশে নিজেদের আধিপত্যবাদকে ধরে রাখার অপচেষ্টা করছে। ভারতের এই চেষ্টা এদেশের হিন্দু-মুসলিম ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবে।'

নাগরিক কমিটির সদস্য এবং ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, 'এদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে অসাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। যদি অসাম্প্রদায়িকতা শিখতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষদের থেকে শিখুন। আমাদের সরকারের সঙ্গে এদেশের জনগণ রয়েছে। ভারতের ষড়যন্ত্রের প্রশ্নে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।' 

কমিটির সদস্য অলীক-মৃ বলেন, 'দিল্লি বাংলাদেশকে ইশারা দেবে তাদের হুকুম বাস্তবায়ন করতে, এটা আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে মেনে নেবো না। শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়ার পর, দিল্লি এখন তার আধিপত্যবাদকে টিকিয়ে রাখতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপেচেষ্টা করছে। আমরা সব ধর্মের মানুষ এদেশে মিলেমিশে শান্তিতে বাস করছি। কিন্তু তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে বাংলাদেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে। দিল্লির এ ধরনের আধিপত্যবাদ মানসিকতার জন্য তার কোনো প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক ভালো নেই।'

কমিটির অন্যতম সদস্য প্রীতম দাস বলেন, 'আমরা বিরোধিতা করছি ভারতে আধিপত্যবাদের। এতদিন পুতুল সরকার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে ভারত স্বাধীন বাংলাদেশকে ভারতের কলোনি বানিয়ে রেখেছে। ভারতের ষড়যন্ত্রকে আমরা হিন্দু-মুসলিম ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করব। বাংলাদেশের হিন্দু এ দেশের নাগরিক। এসব বিষয় নিয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ করার কোনো প্রয়োজন নেই।'

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আইনজীবী মঞ্জুর আল মতিন বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানের সময় দেবাশীষ চক্রবর্তীর কার্টুন যেমন প্রতিদিন আমাদের অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল, তেমনি ছোট্ট শিশুর বুকের তাজা রক্ত আমাদের স্বাধীনতার জন্য অবদান রেখেছিল। তখন আমরা কেউ তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের কথা ভাবিনি। কিন্তু ভারতের নরেন্দ্র মোদি ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। আমরা জানি বিষয়টি কোনো ধর্মের বিষয় নয়, এটি এক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র।'  

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, 'হাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় দেশের মানুষ সুখে আছে, তা ভারতের সহ্য হচ্ছে না। বন্ধুত্ব কী সেটা বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক কোনো অধীনস্তের সম্পর্ক নয়, বরং ন্যায্যতার সম্পর্ক।'  

কমিটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, 'ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বাংলাদেশের মিশনে হামলা করেছে, তা স্পষ্টই দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা দিল্লির ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত।' 

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। 

Comments

The Daily Star  | English

Tourists can visit Saint Martin’s from November, but it ‘really’ opens in December

St Martin’s, one of the most coveted tourist spots in the country, is set to reopen next week after months of closure. Tourists will once again be able to enjoy the serene beauty of Bangladesh’s only coral island. But the news has brought little excitement for the host community, even though tou

19m ago