বিগত সরকার সংবাদপত্রকে শত্রু হিসেবে দেখেছে: গণমাধ্যমে সংস্কার কমিশনে মতিউর রহমান

সভায় উপস্থিত নোয়াব ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন সদস্যদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হয়ে গণমাধ্যম কীভাবে জনগণের স্বার্থে কাজ করতে পারে এ বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নোয়াব সভাপতি ও সদস্যদের সঙ্গে কমিশনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় দ্য ডেইলি স্টারের প্রকাশক মাহফুজ আনাম বলেন, 'গণমাধ্যমের আইনগত কাঠামো ও পরিবেশ—সবকিছু মিলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিবেশ আমাদের নেই।'

প্রথম আলো প্রকাশক মতিউর রহমান বলেন, 'বিশ্বজুড়ে সংবাদপত্র এখন আর সংবাদপত্র নেই। ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুম শিল্পে পরিণত হয়েছে। করোনা মহামারিতে ব্যাপকভাবে সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন আয় কমে গেছে। বিগত ১৫ বছর ও তার আগের সরকার সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। অতীতের কোনো সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিতে পারেনি। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি। বিগত সরকার সংবাদপত্রকে শত্রু হিসেবে দেখেছে।'

নিউ এজ প্রকাশক শহিদুল্লাহ খান বলেন, 'পত্রিকার মিডিয়া তালিকাভুক্তি পদ্ধতি রাখার প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়ে ভেবে দেখা দরকার। প্রেস কাউন্সিলকে আধুনিকায়ন করা দরকার এবং এটিকে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করতে হবে।'

দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক হানিফ মাহমুদ বলেন, 'গণমাধ্যমে সংস্কার কমিশনকে অন্য কোনো স্বার্থানেষী গ্রুপ ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে বহু সম্পাদক এখন মামলার শিকার, পলাতক এবং তাদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে।'

দৈনিক সংবাদের প্রকাশক আলতামাস কবির বলেন, 'রাজনৈতিক পক্ষপাত থাকলেও স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব এবং তা নিশ্চিত করতে হবে।'

দৈনিক ফিনান্সিয়াল হেরাল্ডের প্রকাশক মাসরুর রিয়াজ বলেন, 'সংবাদপত্র প্রকাশ ও অনুমতি প্রদানের ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতার অপপ্রয়োগ হয়েছে, যা ভবিষতে বন্ধ করার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা প্রয়োজন।'

নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, 'প্রকাশক হিসেবে আমাদেরকেও হুমকি ও ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। করোনার সময় সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা দেওয়া হলেও, সংবাদপত্রকে কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয়নি। এই কমিশন সম্পাদকদের স্বাধীনতার জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করবেন বলে আশা করি।'

কমিশন প্রধান বলেন, 'কমিশনের কোনো স্বার্থনেষী দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অংশীজনের সুনির্দিষ্ট মতামতের ভিত্তিতে কমিশন তার সুপারিশমালা তৈরি করবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার স্বায়ত্বশাসন নীতিমালা প্রণয়নেও কমিশন সব মহলের মতামত গ্রহণ করবে।'

সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ, সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ফাহিম আহমেদ, জিমি আমির, মোস্তফা সবুজ, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও বেগম কামরুন্নেসা হাসান।

Comments

The Daily Star  | English

Hopes run high as DU goes to vote today

The much-anticipated Ducsu and hall union elections are set to be held today amid a new wave of hope and expectations for what is being seen as a turning point for campus democracy after a six-year hiatus.

2h ago