গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে গুলি করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিং করেন উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

পরিস্থিতির কারণে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী গুলি করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। 

ওই জেলায় জারি করা ১৪৪ ধারা পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আজ রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গুলি ছোড়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'যে সময় যে পরিস্থিতি, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয়।'

গত বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সংঘর্ষের পর ওই জেলায় কারফিউ জারি করে সরকার। এখন কারফিউ প্রত্যাহার করে ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'গোপালগঞ্জে ধাপে ধাপে ১৪৪ ধারা উঠিয়ে নেওয়া হবে। অন্যায় করলে গ্রেপ্তার হবে। আমি একটি কথাই বলেছি—কোনো অবস্থাতেই যেন দুষ্কৃতিকারী ছাড়া না পায়, আর যে অপরাধ করেনি সে যেন ধরা না পড়ে।'

তিনি আরও বলেন, 'গোপালগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি আমি অস্বীকার করছি না। এটা তো রাজনীতি। রাজনীতি করতে গেলে অনেক কিছুই অনেক সময় ঘটে। আগে যখন আমরাও রাজনীতি করেছি, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কত ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটাই হচ্ছে আসল বিষয়। আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি কি না, সেটাই প্রশ্ন।'

গোপালগঞ্জে মৃত্যুর ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'পুলিশ মামলা করবে কি না, সেটি একটি কমিটি গঠন করে তারাই সিদ্ধান্ত দেবে। গোপালগঞ্জে গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না। যারা অন্যায় করেছে, তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।'

এছাড়া, গোপালগঞ্জের ঘটনায় ৯টি শিশুকেও আটকে রাখা হয়েছে বলে তথ্য দেন এক সাংবাদিক। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এরকম কোনো খবর আমার কাছে নেই। এরপর তিনি জানতে চান, কোন গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। তখন তাকে জানানো হয়, দৈনিক সমকালে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ডাকা আজকের হরতাল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'একটি হরতাল ডাকা হয়েছে। হরতাল আদৌ হয়েছে কি না, সেটা বলেন? দুটি গাড়িই (পোড়ানো) হয়েছে, সত্যি কথা। নাশকতা হয়েছে। তবে অন্যান্য হরতাল আহ্বান করার সময় এই নাশকতা আরও বেশি হয়েছে। সেখান থেকে আমরা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পেরেছি কি না, সেটি আপনারা দেখবেন।'

আগামী ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে কি না—এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না কেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে, আরও তো অনেক সময় বাকি আছে। আমাদের প্রস্তুতি আছে, আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, নিয়মিত অনুশীলন করাচ্ছি। আল্লাহ চাইলে (নির্বাচন) করতে কোনো অসুবিধা হবে না।'

তিনি বলেন, 'আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে আমরা শুনলাম, তারা কীভাবে কাজ করছেন, আগে কী পরিস্থিতি ছিল, এখন কী পরিস্থিতি রয়েছে। তারা ফিডব্যাক দিয়েছেন। তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখনকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি হয়নি, সেটি আপনারা বলতে পারবেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

1h ago