‘হাজার রাতের চেয়ে দীর্ঘ একটি রাত’

মঙ্গলবার সকাল থেকে আইসিইউয়ের সামনে ভিড় করেন স্বজনরা। ছবি: পলাশ খান/স্টার

'আমি আমার স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছি না। প্লিজ আমাকে একটু সাহায্য করুন।'

আজ মঙ্গলবার সকালে এভাবেই জাতীয় বার্ন ইউনিটের সামনে দাঁড়িয়ে সবার কাছে অনুরোধ করছিলেন আমিনুল ইসলাম জনি। তিনি গতকাল থেকে তার স্ত্রীকে খুঁজছেন।

গতকাল যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর আমিনুল ইসলাম জনির স্ত্রী লামিয়া আক্তার সোনিয়া ছুটে যান মাইলস্টোন স্কুলে। তাদের মেয়ে জায়রা সেখানকার তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আমিনুল ইসলাম জনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার মেয়েকে অচেনা একজনের সহায়তায় খুঁজে পেয়েছি। সে স্কুলের একপাশে বসে কাঁদছিল। কিন্তু আমি এখনো আমার স্ত্রীকে খুঁজে পাইনি।'

তিনি জানান, ইতোমধ্যে উত্তরার একাধিক হাসপাতাল, এমনকি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালেও (সিএমএইচ) খুঁজেছেন, কিন্তু কোথাও স্ত্রীকে পাননি।

তার ভাষ্য, 'কেউ তাকে দেখেনি। আমরা শুধু তার জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি পোড়া কপি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে দেখেছি। তাই আজ আবার বার্ন ইউনিটে খুঁজতে এলাম।'

সেখানে উপস্থিত থাকা আরেক স্বজন বলেন, 'গত রাত ছিল হাজার রাতের চেয়ে দীর্ঘ একটি রাত।'

আজ সকাল থেকে ঢাকার বার্ন ইন্সটিটিউটে স্বজনরা ভিড় জমিয়েছেন। তাদের হাতে ছিল ছবি, স্কুলব্যাগ, ছেড়া পোশাক। যেন এগুলো দিয়ে প্রিয় সন্তান বা স্বজনকে শনাক্ত করা যায়।

গতকাল দুপুরে মাইলস্টোন ক্যাম্পাসেই বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে আগুন লেগে যায় ভবনের নিচতলার একাধিক শ্রেণিকক্ষে। শিক্ষার্থীরা তখন ভেতরে আটকা পড়ে।

দোতলা ভবনটির নিচতলায় ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কক্ষগুলো। যে কক্ষে বিমানটি আঘাত করে, সেটি তৃতীয় শ্রেণির জন্য ব্যবহৃত হত।

ঘটনাস্থলের টিভি ফুটেজ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, আগুন ও ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলী বহু দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরপর আগুন ও ধ্বংসাবশেষ রাস্তার ওপর ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল ভবনের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিক্ষার্থীরা হতাহত হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। নিহত ও আহতদের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী।

Comments

The Daily Star  | English

15 army officers in custody taken to tribunal amid tight security

The International Crimes Tribunal-1 is set to review the progress of two cases of enforced disappearance

53m ago