‘নিউরোসায়েন্সে ভর্তি গুলিবিদ্ধ ১৬৭ আন্দোলনকারীর বেশিরভাগের মাথার খুলি ছিল না’

জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ১৬৭ জনকে আগারগাঁওয়ের জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং গুলিতে তাদের বেশিরভাগের মাথার খুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় নিউরোসায়েন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান এ কথা জানান।

ট্রাইব্যুনালে তিনি বলেন, 'মোট ৫৭৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আমাদের হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের অনেকেই গুরুতর ছিলেন, ভর্তি করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সবাইকে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। আমরা ১৬৭ জনকে ভর্তি করি।'

'তাদের মধ্যে ৪ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয় এবং ২৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান,' বলেন তিনি।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, 'আমার নেতৃত্বে চিকিৎসকরা ৩৩ জনের অস্ত্রোপচার করে গুলি ও গুলির স্প্লিন্টার অপসারণ করেন। গুলিবিদ্ধদের অনেকেরই মাথার খুলি ছিল না।'

চিকিৎসক বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ রোগীদের চিকিৎসা না করতে এবং ভর্তি না করতে চাপ দিয়েছিলেন।

'অতি উৎসাহ দেখাবেন না, বিপদে পড়বেন। যারা ইতোমধ্যে ভর্তি হয়েছেন, তাদের ছাড়বেন না। উপরের নির্দেশ আছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' ডা. মাহফুজুর রহমানকে বলেছিলেন ডিবি কর্মকর্তারা।

তিনি আরও জানান, গুলিবিদ্ধ আন্দোলনকারীদের প্রকৃত অবস্থা আড়াল করতে চিকিৎসকরা হাসপাতালের রেকর্ডের তথ্য পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

ডা. মাহফুজ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, 'আমরা সেসময় কৌশল হিসেবে ভর্তি রেজিস্ট্রারে আঘাতের বিবরণ বদলে দুর্ঘটনা বা অন্যান্য কারণ দেখিয়েছি, যেন গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারি।'

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

ডা. মাহফুজসহ ১৬ জন সাক্ষী এ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia laid to eternal rest

Buried with state honours beside her husband Ziaur Rahman

10h ago