আলো জ্বললো মওলানা ভাসানী সেতুতে

তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মওলানা ভাসানী সেতুতে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলেছে। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর রুটে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মওলানা ভাসানী সেতু উদ্বোধন হয় গত ২০ আগস্ট। তবে বৈদ্যুতিক আলো না থাকায় অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল সেতুটি। গত সোমবার রাতে পরীক্ষামূলকভাবে বাতি জ্বালানোর পর গতকাল রাত থেকে সেতুর দুই প্রান্ত ও সংযোগ সড়ক আলোকিত হয়ে উঠেছে।

জমকালো উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেতুটি যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হলেও এতদিন বৈদ্যুতিক বাতি না জ্বলায় সন্ধ্যার পর সেতু ও আশপাশ অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকত।

স্থানীয়রা বলছেন, আলো জ্বলে ওঠায় শুধু যাতায়াতই নয়, নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য দুটোই নিশ্চিত হলো। দীর্ঘদিনের স্বপ্নের সেতুটি তাই এখন হয়ে উঠেছে এক রঙিন আলোকমেলা।

চিলমারীর বাসিন্দা ৬৫ বছর বয়সী নাসির মাহমুদ বলেন, 'উদ্বোধনের পর থেকে সেতুটি রাতে অন্ধকারে থাকত। তখন চুরি-ছিনতাইয়ের ভয়ে আমরা আতঙ্কে থাকতাম। এখন আলো জ্বলছে, তাই স্বস্তি নিয়ে যাতায়াত করা যাচ্ছে।'

হরিপুরের বাসিন্দা সোলেমান মিয়া জানান, 'বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠায় সেতুটি এখন ঝলমলে দেখাচ্ছে। আশপাশও আলোকিত হয়ে উঠছে। এতে আমাদের হতাশা কেটে গেছে।'

সুন্দরগঞ্জের কলেজ শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন বলেন, 'রাতে বৈদ্যুতিক আলোয় সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে তিস্তার পানি দেখা দারুণ অভিজ্ঞতা। আলোয় সেতুটি খুব সুন্দর লাগছে।'

চিলমারী ও হরিপুর পয়েন্টে নির্মিত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ মওলানা ভাসানী সেতুটি তিস্তার ওপর নির্মিত তৃতীয় এবং সবচেয়ে বড় সড়ক সেতু। এর আগে ২০১২ সালে লালমনিরহাটের গোকুন্ডায় ৭৫০ মিটার ও ২০১৮ সালে রংপুরের মহিপুরে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি সেতু চালু হয়, যেগুলো তিস্তা সড়ক সেতু নামে পরিচিত।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী জানান, উদ্বোধনের আগে ল্যাম্পপোস্টে সংযুক্ত প্রায় ৩১০ মিটার বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরি হয়ে গিয়েছিল। ফলে উদ্বোধনের দিন বাতিগুলো জ্বলেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত নতুন সরঞ্জাম এনে পুনরায় সংযোগ দেওয়ায় সমস্যা কেটে গেছে। এখন থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ল্যাম্পপোস্টগুলো জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে।

প্রায় ৭৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতুর ব্যয় ৩৬৭ কোটি টাকা এবং সংযোগ সড়ক, নদীশাসন, কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হয়েছে ৩৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)-এর অর্থায়নে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডির অধীনে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia laid to eternal rest

Buried with state honours beside her husband Ziaur Rahman

7h ago