শত বছরের ঐতিহ্য বকশীগঞ্জের মহিষের দই

জামালপুরের বকশীগঞ্জে শতবর্ষ ধরে টিকে আছে মহিষের দুধের দই তৈরির ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে সদর ইউনিয়নের নইম মিয়ার হাট, যেখানে কয়েক দশক ধরে বিক্রি হচ্ছে ঘন ননিযুক্ত এই দই।
খামারিরা জানান, সরাসরি মহিষের দুধ বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যায় না। কিন্তু সেই দুধ দিয়ে তৈরি দইয়ের জনপ্রিয়তা বেশি।
গরুর দুধের মতো মহিষের দুধ দীর্ঘক্ষণ জ্বাল দেওয়ার বা আলাদা করে দইয়ের বীজ মেশানোর প্রয়োজন হয় না। এর উচ্চ ফ্যাট ও ঘনত্বের কারণে এটি রেখে দিলে এমনিতেই জমে যায়। এতে খুব সহজেই মহিষের দুধের দই তৈরি করা যায়।
দুধ সংগ্রহ করার পর ফ্যানের নিচে বা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করা হয়। এরপর জ্বাল দিয়ে ফুটিয়ে মাটির পাত্রে ঢেলে রাখা হয়। কোনো কৃত্রিম উপকরণ সংযোজন, অতিরিক্ত তাপ বা রাসায়নিক ছাড়াই তিন দিনের মধ্যে দুধ প্রাকৃতিকভাবে জমে গিয়ে দইয়ে পরিণত হয়। এতে এর প্রাকৃতিক স্বাদ ও বিশুদ্ধতা অটুট থাকে।

নইম মিয়ার হাটে প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার দই বিক্রি হয়। বকশীগঞ্জ উপজেলার অন্যান্য বাজারেও এই দই পাওয়া যায়। সাধারণত প্রতি কেজি দই ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও ঈদ ও অন্যান্য উৎসবে চাহিদা সঙ্গে দামও বাড়ে।
মেরুর চরের মহিষ পালক রুস্তম আলী বলেন, 'নদীর তীরের বিশাল চারণভূমি থাকায় মহিষ পালন করা সহজ ও লাভজনক। মহিষের দুধের দই বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। এই ব্যবসা আমার জীবন বদলে দিয়েছে।'
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ জহুরুল হোসেন বলেন, 'মহিষের দুধের দই আমাদের এই অঞ্চলের বহু প্রজন্মের ঐতিহ্য। একে ব্র্যান্ডিং করে সারা দেশে পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করছি।'
Comments