শেরপুরে ব্যতিক্রমী দুর্গামণ্ডপ: পাখির আবাস রক্ষার বার্তা

ছবি: সংগৃহীত

পরিত্যক্ত বাক্স, কার্টনের কাগজ, নারকেলের ছোবড়া, পাট আর কাঠের গুড়াসহ বিভিন্ন ধরনের পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি প্রতিমায় এবার শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করতে যাচ্ছে শেরপুরের মার্চেন্ট ক্লাব।

প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশ, পাখি সুরক্ষা ও পাখির আবাসস্থল সংরক্ষণের বার্তা নিয়ে ব্যতিক্রমী দুর্গামণ্ডপ সাজিয়েছে এবার ক্লাবটি।

শহরের কালীবাজার এলাকায় 'মা ভবতারা কালীমন্দির' চত্বরে স্থাপিত এ পূজামণ্ডপটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক আগ্রহ জাগিয়েছে।

শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটির সভাপতি সুজয় মালাকার বলেন, 'মার্চেন্ট ক্লাব বরাবরই তাদের পূজামণ্ডপটি আকর্ষণীয় ও থিমেটিক করতে চেষ্টা করে। তবে এবার পাখি ও পাখির আবাসস্থলের সুরক্ষা এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তা দিয়ে পূজামণ্ডপ তৈরি করায় ভিন্নমাত্রা পেয়েছে।'

তিনি বলেন, মহালয়ার পর থেকে পুণ্যার্থী ও সাধারণ মানুষ পূজামণ্ডপটি এক নজর দেখার জন্য মন্দিরে ভিড় করছেন। সময়োপযোগী থিম ও পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি দুর্গামন্ডপের জন্য মার্চেন্ট ক্লাব কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছে সবাই। এ পূজামণ্ডপে উপচেপড়া ভিড় হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

সুজয় মালাকার বলেন, প্রতিবছরই ভিন্ন থিম ও বৈচিত্র্যের ওপর ভিত্তি করে শহরের মার্চেন্ট ক্লাবের সার্বজনীন দুর্গাপূজাটি এবার ৫২ বছর অতিক্রম করছে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারের পূজামণ্ডপটি পাখি সুরক্ষা এবং পাখির আবাসস্থল সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। মণ্ডপে প্রবেশের পথে পাখির পালকের মোটিফ তৈরি করা হয়েছে। নারকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি বাবুই পাখির বাসার আদলে নির্মিত দেবী দুর্গাসহ মণ্ডপের প্রতিমাগুলোকে বসানো হয়েছে।

মার্চেন্ট ক্লাবের সদস্য রাজন সরকার রাজু বলেন, মন্দির এলাকায় শতশত চড়ুই পাখি থাকার ব্যবস্থা করেছে মন্দির কমিটি। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই এবারের পূজার থিমটি ঠিক করা হয়েছে ।

রাজন আরও বলেন, মণ্ডপের তিন পাশেই পরিত্যক্ত বাক্স, কাঠের গুড়া আর কার্টনের কাগজে তৈরি করা হয়েছে অনেকগুলো পাখির বাসা। সেখানে কাগজে তৈরি করা হয়েছে বাসায় আশ্রয় নেওয়া এবং উড়ে বেড়ানো শত শত পাখির মোটিফ। আর পূজামণ্ডপকে ঘিরে বর্ণিল আলোকসজ্জা এক ভিন্ন রূপ দিয়েছে।

ক্লাব সদস্য রবীন্দ্রনাথ বসাক বলেন, নগর সভ্যতার কারণে পাখির আবাসস্থল আমরা নিজেরাই নষ্ট করে ফেলেছি। পাখির আবাসস্থল রক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পাখি, পাখির আবাসস্থল, প্রকৃতিকে রক্ষা করার থিম নিয়ে আমরা এবার আমাদের পূজামণ্ডপকে সাজিয়েছি। যেন ধর্মীয় পুণ্যকর্মের সাথে সাথে সকলেই প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতন হয়।

প্রতিমা কারিগর দুই ভাই-গৌড় মালাকার ও নিতাই মালাকার এ ব্যতিক্রমী দুর্গামণ্ডপটি তৈরি করেছেন।

শিল্পী নিতাই মালাকার বলেন, 'আমরা দুর্গাপূজার থিমটা করেছি পাখি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ করার আবেদন নিয়ে।'

নিতাই জানান, এ দুর্গামণ্ডপটি তৈরি করতে প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লেগেছে এবং খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।'

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

3h ago