খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় আসকের উদ্বেগ, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

খাগড়াছড়িতে অবরোধের সময় গত বৃহস্পতিবার তোলা ছবি। ছবি: জয়ন্তী দেওয়ান

খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু, বেশ কয়েকজন আহত এবং সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।

পাশাপাশি এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রমাণভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার পরিবারের সুষ্ঠু নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় বলেও জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মারমা সম্প্রদায়ের স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়। ন্যায়বিচারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় তরুণেরা বিক্ষোভ, অবরোধ ও হরতাল পালন করে আসছিল। প্রতিবাদ চলাকালীন উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া পদক্ষেপ আরও ভয়াবহ রূপ নেয়, যা শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী সংঘর্ষে রূপ নেয়।

আসক মনে করে, 'সংঘটিত ঘটনায় যদি কোনো ধরনের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটে থাকে, সরকার যেন তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আমরা লক্ষ্য করছি, পার্বত্য এলাকায় প্রায়ই উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে, যা জনজীবন ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির কারণও হচ্ছে। অতীতে সংঘটিত এ ধরনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত এবং পেছনের অন্তর্নিহিত কারণ নিরূপণ না হওয়ায় এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।'

বিবৃতিতে আসক জানায়, 'বাংলাদেশ একটি বহুজাতি ও বহু সংস্কৃতির দেশ। এই বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি, বিভেদ নয়। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কেবল পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য নয়, বরং জাতীয় ঐক্য ও দেশের ভাবমূর্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সহিংসতা, ভীতি ও উসকানি কখনোই সমাধান নয়। এগুলো কেবল পারস্পরিক অবিশ্বাস ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এবং রাষ্ট্রের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে। আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, নাগরিক অধিকার সবার জন্য সমান। কারও প্রতি অবিচার, কারও প্রতি বৈষম্য কিংবা কারও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়া মানে রাষ্ট্রই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।'

অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে এই ঘটনার প্রকৃত কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করতে হবে বলে জানায় আসক।

সেইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে বলে জানায় আসক।

মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, 'রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের জীবন, সম্পদ ও মর্যাদা রক্ষা করা। সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি পুরো সমাজকেই বহন করতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Tug-of-war over water lily continues

The Election Commission and National Citizen Party remain locked in a heated debate over the party’s choice of electoral symbol, the water lily -- a dispute that began in June.

3h ago