রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা নিয়ে ‘স্টার নির্বাচনী সংলাপ’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবনা ও নাগরিকদের চাওয়া জানতে দ্য ডেইলি স্টার আয়োজন করেছে 'স্টার নির্বাচনী সংলাপ।'
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন-মৈত্রী সম্মেলনে এ আয়োজন শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডেইলি স্টারের কনসাল্টিং এডিটর কামাল আহমেদ এ আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বলেন।
ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনামের পক্ষে যুগ্ম সম্পাদক আশা মেহরীন আমিন স্বাগত বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, 'ডেইলি স্টার একটি সৎ, জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ সরকারে বিশ্বাস করে, যারা আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো সমুন্নত রাখবে। এটি শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনেই সম্ভব, যা কেবলমাত্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব হবে। তবে আমরা এটাও জানি যে, সরকার যতই চেষ্টা করুক না কেন, এটা সম্ভব করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা আমাদের নির্বাচনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে, বিশেষ করে জেনারেল এরশাদের পতনের পর থেকে দেখতে পাই ১৯৯০ সালের পর আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার এক বিরাট সুযোগ ছিল। আমাদের এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ ছিল, যা জনগণের সেবা করবে, বর্তমান ক্ষমতার নয়। আমাদের একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ ছিল, স্বৈরাচারী বাংলাদেশ নয়।'
'আমাদের এখন আবার একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এসেছে। তবে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং এখানেই রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা আসে', বলেন তিনি।
আশা মেহরীন আমিন বলেন, 'এই সংলাপের মাধ্যমে দলগুলো বাংলাদেশের জনগণকে বলবে—তারা নির্বাচিত হলে বা বিরোধী দলে থাকলে তাদের কাজ কী হবে?'
ডেইলি স্টারের যুগ্ম সম্পাদক বলেন, 'দ্য ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলোর ওপর সর্বশেষ আক্রমণ কেবল এই দুটি সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশ, গণতন্ত্র এবং বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনকে বিপন্ন করার জন্য। নির্বাচনই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম উপায়। এটিকে ব্যাহত করতে সফল হওয়া বাংলাদেশের শত্রুদের জন্য সবচেয়ে বড় সাফল্য হবে।'
'এখানে আমাদের দৃঢ় অবস্থান হলো—আমাদের সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ইত্যাদি এবং গণমাধ্যম একসঙ্গে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কাজ করা উচিত। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনি যে বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বারা সমাধান করতে চান, তা আমাদের তুলে ধরা উচিত। তবে কারও এমন কিছু করা উচিত নয়, যা নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ বাড়ায়।'
আশা মেহরীন আমিন আরও বলেন, 'এখন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করার এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য সবকিছু করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।'
অনুষ্ঠানে অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ, নাগরিক অধিকারকর্মী মিজানুর রহমান প্রমুখ।

Comments