আ. লীগের সম্মেলন ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি

সম্মেলন ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকা ছেয়ে গেছে বর্ণিল ব্যানার-ফেস্টুনে। ছবি: আসিফুর রহমান/স্টার

আগামীকাল শনিবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সেজেছে ভিন্ন রূপে। বিশাল প্যান্ডেলে সারবদ্ধভাবে সাজানো শূন্য চেয়ারগুলো অপেক্ষায় হাজারো নেতা-কর্মীর।

আজ শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। সম্মেলনস্থলে প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ও প্যান্ডেল তৈরির কর্মীদের ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের সদস্যরা। প্রায় শ' খানেক সিসিক্যামেরা বসেছে পুরো উদ্যোন ও এর আশপাশের এলাকায়। পুলিশের কন্ট্রোলরুমে এগুলোর মনিটর।

নেতা-কর্মীদের বসার জন্য সাজিয়ে রাখা চেয়ার। ছবি: আসিফুর রহমান/স্টার

পুলিশ বলেছে, এই নিরাপত্তাব্যবস্থার কড়াকড়ি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সম্মেলনে সশরীরে যোগ দেবেন। নেতা-কর্মীরা বলছেন, আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ কেমন হবে, প্রধানমন্ত্রী তাদের সেই দিকনির্দেশনা দেবেন। সঙ্গে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতির বিষয়েও কথা বলবেন তিনি।

এদিন সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশে দলের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছাবার্তাসহ বহু প্ল্যাকার্ড ঝুলতে দেখা গেছে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে বড় করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় ৪ নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যদের ছবি।

বাম পাশে পতাকা উত্তোলন স্ট্যান্ডটি সাজানো হয়েছে ফুল দিয়ে। পেছনে নৌকার ওপর মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কর্ণফুলি টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ছবি। মূল মঞ্চের সামনে বড় বড় সাউন্ড সিস্টেম, পাশে আলাদা একটি প্যান্ডেলে বড় পর্দায় মূল মঞ্চের আয়োজন দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশের ছোট আরেকটি মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া চলছিল। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে।

মূল মঞ্চের একপাশে চলছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া। ছবি: আসিফুর রহমান/স্টার

সম্মেলনের মূল মঞ্চ সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে। পেছনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবির একপাশে বঙ্গবন্ধু, অন্যপাশে বঙ্গবন্ধুকন্যার ছবি। মঞ্চের ব্যাকগ্রাউন্ডেও শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ ও সজীব ওয়াজেদের ছবি আছে। সঙ্গে রয়েছে পদ্মা সেতুর অবয়ব। সেতুর ২ প্রান্তের এক পাশে আছে জাতীয় চার নেতার ছবি, অন্য পাশে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশের ছবি রয়েছে।

মঞ্চের শেষ প্রান্তের দিকে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, শৌচাগার ও মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উদ্যানের এই জায়গাটিতেই উত্তোলন করা হবে জাতীয় ও দলীয় পতাকা। ছবি: আসিফুর রহমান/স্টার

সম্মেলনের মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। সম্মেলনে খাবার পানি, ৩ মেডিকেল ক্যাম্প ও জরুরি সেবায় ৩টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সামগ্রিক শৃঙ্খলারক্ষার দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা।

সম্মেলন থেকে নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা কী- জানতে চাইলে নানক বলেন, 'আমরা আশা করছি আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিবেন। এর আগে তিনি আমাদের যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তার বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন সামনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা আসবে।'

চলছে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ। ছবি: আসিফুর রহমান/স্টার

তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনা ৪২ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দলের ভালো মন্দ, গ্রাম গঞ্জের খবর তিনিই ভালো জানেন। তিনি যত নেতা-কর্মীকে চেনেন আর কেউ চিনে না। সম্মেলনে সামনের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।'

Comments

The Daily Star  | English
Post-crash response Bangladesh

Funding uncertainty stalls post-crash response plan

The health authorities seek to roll out a post-crash response plan for the first time to reduce preventable deaths and disabilities resulting from road accidents, but funding uncertainties are delaying its implementation.

11h ago