আন্দোলনে অবরোধের বিকল্প খুঁজছে বিএনপি

রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক বিএনপির

শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হলেও নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতারা।

নেতারা মনে করছেন, অবরোধের মতো কর্মসূচি দীর্ঘ সময় ধরে চললে একসময় তা অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং দলও জনগণের সহানুভূতি হারাতে পারে, যা তারা বছরের পর বছর ধরে অর্জন করেছে।

ফলে, তারা এখন আন্দোলনে নতুন কিছু কর্মসূচি যোগ করার পরিকল্পনা করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, 'কর্মসূচিতে নতুনত্ব থাকবে। নতুন কর্মসূচির মধ্যে অবরোধ ছাড়াও হরতাল ও ঘেরাও কর্মসূচি থাকবে।'

গত ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের পর বিএনপি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ও তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে এবং এরপর আবারও আগামীকাল থেকে দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে।

দলটির নেতারা বলছেন, দীর্ঘ সময় অবরোধ চলতে থাকলে জনগণ তা পছন্দ করে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির আন্দোলনের সময়ও এমনটাই হয়েছিল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।'

গত ১ নভেম্বর রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে আন্দোলনের কৌশল প্রণয়ন করা হয়।

কমিটির সদস্যরা বলেন, বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে সরকার বিএনপির ২৮ অক্টোবরের জনসভা বানচাল করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করার পর পুলিশ কীভাবে তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার শুরু করেছে এ বিষয়েও আলোচনা করেছেন তারা। এর থেকে নেতাদের অবশ্যই শিক্ষা নেওয়া উচিৎ বলেও সভায় আলোচনা হয়।

তাদের আশঙ্কা, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রাখবে এবং নির্বাচনের আগে কাউকে ছাড়বে না।

এ মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। ২০১৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, 'এ কারণে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।'

বিএনপি বলছে, গত ১১ দিনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য, তিনজন যুগ্ম মহাসচিবসহ অন্তত ৪ হাজার ৮৪৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার এড়াতে দলটির অনেক নেতাই বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, দলটির বেশিরভাগ নেতাই হয় জেলে, না হয় গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়ির বাইরে থাকেন। ফলে, নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হতে পারেন। এ কারণে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়মিত জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং আন্দোলনের সমন্বয় করছেন।

মঈন খান বলেন, 'দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সব বিরোধী দলের আন্দোলনকেও সমন্বয় করেছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।'

তিনি বলেন, 'বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। শুধু শীর্ষ নেতাদের হাতে এই দলের শক্তি পুঞ্জিভূত নয়। তৃণমূল কর্মীসহ মধ্য ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের হাতেই এই দলের শক্তি। দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে যে কোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে আমাদের শীর্ষ নেতাদের অবৈধভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কাজেই তারা পালিয়ে আছেন, সেটা ভাবা হবে বিভ্রান্তিমূলক।'

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu polls returns to campus in style with exceptional voter turnout

It was 78% this time, a leap from 50-60% in the 1970s and ‘80s

20m ago