মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া, বরণে বিশাল পরিকল্পনা বিএনপির

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি সংগৃহীত

প্রায় চার মাস লন্ডনে চিকিৎসাধীন থাকার পর আগামী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা দিতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির নেতারা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সোমবার হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা দেবেন। তাকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে থাকবেন তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ রোববার বিএনপি মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।

লন্ডন থেকে আজ রোববার রওনা হয়ে সোমবার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার ভ্রমণ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসে এবং একদিন পেছানো হয়েছে।

মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের স্থায়ী কমিটির শীর্ষ নেতারা। সেখান থেকে খালেদা জিয়া যাবেন গুলশানে নিজ বাসভবন 'ফিরোজা'য়।

দলীয় নেতাদের বরাতে জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে ফিরোজা পর্যন্ত রাস্তায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শারমিলা রহমান তার সঙ্গে দেশে ফিরবেন।

২০০৮ সাল থেকে জোবাইদা রহমান লন্ডনে রয়েছেন। স্বামী তারেক রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানের সঙ্গে লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি।

দেশে ফেরার পথে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকবেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা এনায়েতুল হক চৌধুরী এবং সহকারী ব্যক্তিগত সচিব মাসুদুর রহমান।

খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য—কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক শাহাবউদ্দিন তালুকদার ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা. জাফর—রোববার লন্ডনে পৌঁছেছেন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে।

গতকাল গুলশানে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনেকটা উন্নত হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'পারিবারিক পরিবেশে থেকে এবং উন্নত চিকিৎসা নেওয়ায় তিনি আল্লাহর রহমতে অনেকটা সুস্থ বোধ করছেন। তাই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'পুরো জাতি আবেগতাড়িত হয়ে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত। সারা দেশের দেশপ্রেমিক মানুষ তার প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।'

মির্জা ফখরুল জানান, বিমানবন্দর থেকে তার বাসভবন পর্যন্ত যাত্রাপথে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিএনপি সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আহ্বান জানান, পথে যেন কোনো ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয়।

একইসঙ্গে তিনি সাধারণ জনগণকে ওইদিন যানজট এড়াতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের আহ্বান জানান।

গতকাল রাতে এক যৌথ সভায় বিএনপি নেতারা কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, নেতাকর্মীরা যেন কোনোভাবেই রাস্তা বন্ধ না করেন বা বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তায় কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটান।

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার দিন—৭ জানুয়ারি ২০২৫—নেতাকর্মীদের ভিড়ের কারণে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে তার এক ঘণ্টা ৪৭ মিনিট দেরি হয়েছিল।

খালেদা জিয়ার ফেরার দিন—মঙ্গলবার—কর্মদিবস হওয়ায় যানবাহনের চাপ স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকবে এবং এর মধ্যে বড় কোনো জমায়েত হলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হতে পারে। তাই নেতাকর্মীদের কঠোরভাবে নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

বিএনপি সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে, খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ও ধানমন্ডিতে জোবাইদা রহমানের পৈতৃক বাড়ি 'মাহবুব ভবন'র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিমানবন্দর থেকে তার বাসভবন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খলভাবে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করছেন সাবেক মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) একেএম শামসুল ইসলাম শামস।

গত ৭ জানুয়ারি রাত পৌনে ১২টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন এবং যেখানে ১৭ দিন চিকিৎসা নেন।

এরপর গত ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তারেক রহমানের বাসভবনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Tug-of-war over water lily continues

The Election Commission and National Citizen Party remain locked in a heated debate over the party’s choice of electoral symbol, the water lily -- a dispute that began in June.

5h ago