ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রার্থী দেয়নি বিএনপি, রুমিন ফারহানার সমর্থকরা হতাশ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে কারও নাম ঘোষণা না করায় হতাশ হয়েছেন দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ও সাবেক এমপি রুমিন ফারহানার অনুসারীরা।
সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা এবং বিজয়নগর উপজেলার একাংশ (দুটি ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। আসনটিকে বিএনপির দুর্গও বলা হয়ে থাকে। তবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বেশীরভাগ সময় জোট প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দখলে ছিল এই আসনটি। রুমিন ফারহানা ২০১৯ সালে সংরক্ষিত আসনে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরাইল-আশুগঞ্জের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এই আসন থেকে মনোনয়ন পেতে রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। সরাইল ও আশুগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে- ওয়ার্ডে গিয়ে সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন তিনি। এলাকার মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতিও।
এই আসন থেকে রুমিন ফারহানার সঙ্গে মনোনয়ন প্রতিদ্বন্দিতার দৌড়ে রয়েছেন অন্তত আরও সাতজন নেতা। সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। এতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সরাইল ও আশুগঞ্জের বিএনপি নেতাকর্মীরা, যাদের বড় অংশই রুমিন ফারহানার সমর্থক।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসনটি জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। তবে রুমিন ফারহানার অনুসারীরা জানিয়েছেন, এমন সিদ্ধান্ত এলে তারা আন্দোলনে নামবেন। তাদের দাবি, রুমিন ফারহানাকে উপেক্ষা করলে বিএনপি এখানে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সরাইল উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, রুমিন ফারহানা ২০১৭ সাল থেকে মাঠে কাজ করছেন। এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেছেন, উপনির্বাচনের সময় বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের অবস্থান রক্ষা করেছেন। এখন তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে সেটি স্থানীয়দের প্রতি অবিচার হবে।
তাদের বক্তব্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জোটের প্রার্থী দিলে তিনি জামানত হারাবেন। অতীতেও এমন উদাহরণ আছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থী ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি আমিনী পরাজিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধার কাছে। এরপর থেকেই সরাইল-আশুগঞ্জ উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েছে।
১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী একবারও জয়ী হননি। রুমিন ফারহানার সমর্থকরা বলছেন, বিএনপি তাদের ঘাঁটি হারাতে বসেছে নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তে।


Comments