২৩ দিন ধরে অন্ধকারে কালুরঘাট সেতু

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু প্রায় ২৩ দিন ধরে অন্ধকারে। বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরি হওয়ায় সেতুর লাইটগুলো জ্বলছে না। অন্ধকারের কারণে সেতু ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সন্ধ্যার পর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৯৫ বছরের পুরোনো এই সেতুটিতে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা ও স্থানীয়রা।
জান আলী হাট রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার নেজাম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, লাইটগুলো সচল করতে গত ৩১ আগস্ট তারা জরুরি চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
'সম্ভবত গত ১৫ আগস্ট বাতির তার চুরির ঘটনা ঘটেছে,' বলেন তিনি।
এদিকে, গত ছয় মাসে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। পাশাপাশি একাধিক ট্রেন-গাড়ি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, অন্ধকার অবস্থায় আরও দুর্ঘটনা ও ছিনতাইয়ের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
বোয়ালখালী সদরের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে রাতে সেতুটি এখন ভূতুড়ে স্পটে পরিণত হয়েছে। লাইট বন্ধ থাকার কারণে আমরা ভয়ে এখন অন্ধকারে সেতু পার হই না।'
গতকাল রোববার রাতে সেতু পরিদর্শন করে দেখা যায়, পুরোপুরি অন্ধকারে ডুবে আছে সেতু, একটি সড়কবাতিও জ্বলছে না।
বোয়ালখালী পয়েন্ট থেকে সেতু পার হচ্ছিলেন কলেজ ছাত্র সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'আমরা অন্ধকারের কারণে দুর্ঘটনার ভয় পাচ্ছি।'
রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, সেতুটি পুনরায় সংস্কারের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে বিভাগের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংস্কারকালে সড়কবাতি রক্ষণাবেক্ষনসহ নিরাপত্তার দায়িত্ব ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের।'
তিনি জানান, দ্রুত সড়কবাতি চালুর জন্য ম্যাক্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নতুনভাবে সংস্কারের পর পথচারীদের সুবিধার্থে ৩১টি স্ট্রিটলাইট স্থাপন করা হয়েছে কালুরঘাট সেতুতে।
ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৮০০ ফুট বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরি হয়েছে।
ম্যাক্সের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ পর্যন্ত দুইবার ক্যাবল চুরি হয়েছে। আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি, তবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি। তবে আমরা সড়কবাতিগুলো সচলের জন্য কাজ করছি।'
Comments