কৃষ্ণ সাগরে ড্রোন হামলা

এক সপ্তাহ পর বাংলাদেশি নাবিককে উদ্ধার

ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাংকারে বাংলাদেশি নাবিক প্লাবন। ছবি: সংগৃহীত

কৃষ্ণ সাগরে ড্রোন হামলায় বিধ্বস্ত তেলের ট্যাংকারের বাংলাদেশি নাবিকসহ ১০ ক্রু সদস্যকে এক সপ্তাহ পর বুলগেরিয়ার উপকূল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে তাদের উদ্ধার করে বুলগেরিয়ান কোস্টগার্ড। হোয়াটসঅ্যাপে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জাহাজের বাংলাদেশি চতুর্থ ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুল ইসলাম প্লাবন।

ভয়েস মেসেজে তিনি বলেন, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫মিনিটে হেলিকপ্টারে করে বুলগেরিয়ান কোস্টগার্ড দল আসে। হেলিকপ্টারে জায়গা স্বল্পতার কারণে প্রথমে সাতজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে বাকি তিনজনকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

তিনি বলেন, প্রথমে উদ্ধার করা সাত ক্রুকে বুলগেরিয়ার একটি নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাতজনকে একটি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়।

মাহফুজুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বিকেলে তাদের একটি স্থানীয় হোটেলে নেওয়া হয়। 

পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ইমিগ্রেশনের পক্ষ থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবেও বলে জানান তিনি।

মাহফুজুল ইসলাম আরও বলেন, রোববার সন্ধ্যায়ও কোস্টগার্ড একটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছিল, তবে ভারী বৃষ্টির কারণে উদ্ধার করতে পারেনি।

'কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে আবহাওয়া সতর্ক সংকেত জারি ছিল। আজ সংকেত তুলে নেওয়ায় সকালে উদ্ধারে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়', বলেন তিনি।

গত ২৮ নভেম্বর বিকেলে তুরস্কের উপকূলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে দুটি তেল ট্যাংকারে ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেনীয় নৌবাহিনী। এর মধ্যে এমটি কায়রোসের ৫ নাবিকের মধ্যে ৪ জন ছিলেন বাংলাদেশি। হামলার পরপরই তুর্কি কোস্টগার্ড সব নাবিককে উদ্ধার করে। পরে প্লাবনসহ ১০ জন আবার টাগবোটে করে ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাংকারে যান।

ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটির চীনা মালিকপক্ষ সেটিকে উদ্ধারে একটি টাগবোট ভাড়া করেছিল। সেই টাগবোটে করে গত ৩০ নভেম্বর তারা ইস্তাম্বুল থেকে ৩০ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সাগরে অবস্থান করা এমটি কায়রোসের কাছে যান। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাহাজটিকে গভীর সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা।

এরপর তারা জাহাজে উঠে পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করেন। তারপর ১ ডিসেম্বর তারা জাহাজে থাকা অবস্থাতেই টাগবোটটি জাহাজটিকে টেনে ইস্তাম্বুলের বহির্নোঙ্গর এলাকায় আসে। কিন্তু জাহাজটি সেখানে নোঙর করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু এরইমধ্যে টাগবোটটি চলে যায়।  পরে জাহাজটি ভেসে চলে যায় বুলগেরিয়ার উপকূলে।

গত কয়েকদিনে বারবার অনুরোধ করেও বুলগেরিয়ান কোস্টগার্ডের কাছ থেকে সাড়া না পাওয়ায় ১০ নাবিককে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ড্রোন হামলার পর আগুনে জাহাজটি প্রায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে 'ডেড শিপে' পরিণত হয়েছিল।

তিনি বলেন, থাকার মতো কোনো জায়গা অবশিষ্ট না থাকায় শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রা, ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতের মাঝেই নাবিকেরা জাহাজের মাঝামাঝি একটি ছোট স্টোরে আশ্রয় নেন। তাদের খাদ্য মজুতও প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং যা ছিল তাও নষ্ট হয়ে যায়।

উদ্ধার হওয়া অন্য তিন বাংলাদেশি নাবিক ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন বলে জানান  সাখাওয়াত হোসেন।
 

Comments

The Daily Star  | English

CA to address nation at 6:00pm marking Victory Day

Bangladesh Television, BTV News and Bangladesh Betar will broadcast the address

29m ago