৩ সেপ্টেম্বর আবারো চাঁদে রকেট পাঠানোর চেষ্টা করবে নাসা

সুর্যোদয়ের সময় নাসার এসএলএস রকেটের দৃশ্য। ছবি: নাসা
সুর্যোদয়ের সময় নাসার এসএলএস রকেটের দৃশ্য। ছবি: নাসা

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার আর্টেমিস প্রকল্পের আওতায় চন্দ্রাভিযানে প্রাথমিক ধাক্কার পর রকেট উৎক্ষেপণের নতুন দিন হিসেবে আগামী শনিবার ৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৭ মিনিট (বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ১২টা ১৭ মিনিট) থেকে পরবর্তী ২ ঘণ্টার মধ্যে উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা চালানো হবে।

আজ নাসা'র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সোমবার নাসার আর্টেমিস ১ অভিযানের অংশ হিসেবে এসএলএস রকেট ও এর ওপর বসানো মনুষ্যবিহীন ক্যাপসুল ওরিওনের চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা থেকে শুরু করে পরবর্তী ২ ঘণ্টা ফ্লোরিডার কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে রকেটের উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারণ করা হলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার অভিযানের ব্যবস্থাপকরা প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেন এবং ২৯ আগস্ট উৎক্ষেপণ প্রয়াস ব্যর্থ হওয়ার কারণ নিয়ে বৈঠক করেন।

নাসা জানিয়েছে, সোমবার আর্টেমিসের কর্মীরা রকেটের ৪টি আরএস-২৫ ইঞ্জিনের তাপমাত্রাকে প্রায় মাইনাস ৪২০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। তবে ৩ নম্বর ইঞ্জিনের তাপমাত্রা অন্যগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি ছিল। এছাড়াও, কর্মীরা পার্জ ক্যান নামক একটি যন্ত্রাংশ থেকে হাইড্রোজেন নিসৃত হওয়ার বিষয়টি চিহ্নিত করেন।

চাঁদের পটভূমিকায় নাসার এসএলএস রকেট। ছবি: নাসা
চাঁদের পটভূমিকায় নাসার এসএলএস রকেট। ছবি: নাসা

তবে 'হাইড্রোজেন লিক' সারাতে বেশি সময় নেননি নাসার প্রকৌশলী দল।

বিবিসির প্রতিবেদন মতে, সোমবারের অভিযান ব্যর্থ হওয়ার কারণটি ইঞ্জিন নয়, বরং যে প্রক্রিয়ায় ইঞ্জিনগুলোকে ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত করা হয়, তাতে কিছু সমস্যা ছিল।

এ সমস্যার মোকাবিলায় প্রকৌশলীরা শনিবার ইঞ্জিন ঠান্ডা করার প্রক্রিয়াটি ৪৫ মিনিট আগে থেকেই শুরু করবেন, যাতে উৎক্ষেপণের সময় আর কোনো ঝামেলা না হয়।

নাসার আর্টেমিস অভিযানের ব্যবস্থাপক মাইক সারাফিন বলেন, 'আমরা ৩ তারিখে (সেপ্টেম্বর) আবারও লঞ্চ করার চেষ্টা করবো। আমরা আগেও বলেছি, ইঞ্জিনের তাপমাত্রা সঠিক মাত্রায় না নিয়ে আসতে পারলে আমরা রকেট উৎক্ষেপণ করবো না। শনিবারের ক্ষেত্রেও আমরা একই মনোভাব বজায় রাখবো।'

আগামী কয়েকদিন আর্টেমিস অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা রকেটে হাইড্রোজেন লোড করার প্রক্রিয়ার মহড়া চালাবেন। রকেট উৎক্ষেপণের কাউন্টডাউন শুরু হওয়ার ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট আগে থেকে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা করার প্রক্রিয়াকে 'কিক স্টার্ট ব্লিড টেস্ট' নাম দিয়েছেন নাসার কর্মকর্তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়াবিদদের মতে, শনিবারের আবহাওয়া রকেট উৎক্ষেপণের জন্য অনুকূল। কিছু বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হলেও রকেট উৎক্ষেপণের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বড় আকারে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

অভিযানের ব্যবস্থাপনা দল আবারও বৃহস্পতিবার বৈঠক করে সব তথ্য ও সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা করবেন।

সুর্যোদয়ের সময় নাসার এসএলএস রকেটের দৃশ্য। ছবি: নাসা

আর্টেমিস ১ হচ্ছে একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইট। নাসার নতুন মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ৫০ বছর পর চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি হিসেবে এই ফ্লাইটের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সংস্থাটি আশা করছে, আর্টেমিস-২ অভিযানের অংশ হিসেবে ওরিওন ক্যাপসুলে করে নভোচারীরা চাঁদের চারপাশে ঘুরে আসবেন।

নাসা আরও জানিয়েছে, পরবর্তী অভিযানে (আর্টেমিস ৩ বা আরও পরের কোনো অভিযান) প্রথম নারী ও শ্বেতাঙ্গ নন এমন নভোচারী চাঁদে অবতরণ করবেন।

মঙ্গলগ্রহে অভিযান ও নভোচারীদের অবতরণের পূর্ব-প্রস্তুতি হিসেবে নাসা আর্টেমিস প্রকল্প চালু করেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

4h ago