ফ্রান্স বনাম ক্রোয়েশিয়া : ভবিষ্যদ্বাণী, একাদশ ও রেকর্ড

৩১ দিনের লড়াই শেষে মস্কোতে আজ ফাইনালের মহা মঞ্চে শিরোপা যুদ্ধে মাঠে নামছে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। ফ্রান্সের হয়ে দিদিমার দেশম ইতিহাস ছোঁবেন নাকি নতুন কোন ইতিহাস লিখবে ক্রোয়েশিয়া? থাকছে প্রতিশোধেরও একটি ব্যাপার। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরেই সেমিফাইনালে থেমেছিল ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্ন যাত্রা। 

ম্যাচের ফলাফল কি হবে তা জানা যাবে ম্যাচ শেষে, তবে তার আগেই ফলাফলের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, কৌশলও তুলে ধরা হলও-

কখন?

বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা, রোববার, ১৫ জুলাই।

কোথায়?

লুঝনিকি স্টেডিয়াম, মস্কো

নজরে থাকবেন যারা

চলতি বিশ্বকাপে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ১৯ বছর বয়সী কিলিয়ান এমবাপে। আর্জেন্টিনাকে প্রায় একাই ছিটকে দিয়েছেন বিশ্বকাপ থেকে। সর্বকনিষ্ঠ ফরাসী হিসেবে বিশ্বকাপে গোল দেওয়ার রেকর্ডটিও করেছেন। ফাইনালেও বাজির ঘোড়া হতে পারেন তিনিই। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা পল পগবা মাঝ মাঠের মূলস্তম্ভ। এছাড়া অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের আঁতোয়া গ্রিজম্যান, বার্সেলোনার ওসমান ডেম্বেলের দিকেও থাকবে বাড়তি নজর।

মধ্যমাঠে বর্তমান সময়ের সেরা তারকা লুকা মদ্রিচ ক্রোয়েশিয়ার প্রাণ ভোমরা। ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তোলার মূল কারিগর এ রিয়াল মাদ্রিদ তারকাই। বার্সা তারকা ইভান রকিতিচও কম যাননি। নকআউট পর্বের প্রথম দুই ম্যাচেই শেষ পেনাল্টি নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করে দলকে জিতিয়েছেন। এছাড়া মারিও মানজুকিচ ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। গোলরক্ষক সুবাসিচও দুর্দান্ত ছন্দে আছেন।

সম্ভাব্য একাদশ ও ম্যাচের কৌশল

ফ্রান্স : (৪-২-৩-১) লরিস, পাভার্দ, ভারানে, উমতিতি, লুকাস, কান্তে, পগবা, এমবাপে, গ্রিজম্যান, মাতুইদি ও জিরুদ।

ক্রোয়েশিয়া : (৪-২-৩-১) সুবাসিচ, ভ্রাসাইকো, লোভরেন, ভিদা, স্ট্রিনিচ, রকিতিচ, রেবিচ, ব্রোজাভিচ, মদ্রিচ, পেরিসিচ ও মানজুকিচ।

ভবিষ্যদ্বাণী : শক্তির বিচারে অনেক এগিয়ে ফ্রান্স। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ খেলছে ক্রোয়েশিয়া। আর লড়াইটা যখন শিরোপার, তখন মরণ কামড়ই দেবে দলটি। কিন্তু বড় ম্যাচের চাপ সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা ফরাসীদের পুরনো। নকআউট পর্বে শেষ তিন ম্যাচে যেভাবে জিতেছে ক্রোয়েটরা, তাতে চাপ যে তারাও সামাল দিতে তা প্রমাণিত। তাই লড়াইটা হবে বেশ হাড্ডাহাড্ডিই। তবে ইতিহাসের কারণেই কিছুটা এগিয়ে থাকবে ফ্রান্স।

সম্ভাব্য স্কোর : ফ্রান্স ২-১ ক্রোয়েশিয়া

অতিরিক্ত সংযোজন :

১) দুই দলের এটা ষষ্ঠ মোকাবেলা। এর আগের পাঁচ লড়াইয়ে কখনো হারেনি ফরাসীরা (জয় ৩, ড্র ২) ।

২) বিশ্বকাপে এর আগে একবার মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালের সেমিফাইনালে সেবার ২-১ গোলে জিতেছিল ফ্রান্স।

৩) ইউরো ২০০৪ একই গ্রুপে পড়েছিল দল দুটি। ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল সে ম্যাচ।

৪) বিশ্বকাপ ইতিহাসে তিনবার বা তার বেশিবার ফাইনাল খেলার রেকর্ডে ফ্রান্স ষষ্ঠ দল। সর্বাধিক আটবার ফাইনাল খেলেছে জার্মানি। এছাড়া ব্রাজিল ও ইতালি ছয়বার, আর্জেন্টিনা পাঁচবার এবং নেদারল্যান্ডস তিনবার ফাইনালে খেলেছে।

৫) মেজর টুর্নামেন্টে এটা ফ্রান্সের ষষ্ঠ ফাইনাল। আগের পাঁচটিতে তিনবার জিতেছে তারা।

৬) বিশ্বকাপের ফাইনালে চার গোলের তিনটি ফরাসীরা করেছে সেট পিস থেকে (দুটি কর্নার, একটি পেনাল্টি)।

৭) পেনাল্টি শুট আউট ছাড়া বিশ্বকাপে শেষ ১৪টি নকআউট ম্যাচে মাত্র একটিতে হেরেছে ফ্রান্স (১১ জয়, ২ ড্র)। গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হেরেছিল তারা।

৮) বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা ১৩তম দেশ ক্রোয়েশিয়া।

৯) প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে শেষ দুটি দলই শিরোপা জিতেছিল (১৯৯৮ সালে ফ্রান্স, ২০১০ সালে স্পেন)।

১০) বিশ্বকাপ ইতিহাসে ক্রোয়েশিয়াই একমাত্র দল যারা নকআউট পর্বের তিনটি ম্যাচেই শুরুতে পিছিয়ে পড়ে ফাইনালে উঠেছে। ফাইনাল অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে নতুন ইতিহাসে নাম লেখাবে দলটি। এর আগে কখনোই চারটি নকআউট ম্যাচ অতিরিক্ত সময় খেলতে হয়নি।

আরও পড়ুন ঃ ফ্রান্স কোচের সামনে ইতিহাসের হাতছানি​

Comments