'টেস্ট ক্যারিয়ার ৩৫০ উইকেট নিয়ে শেষ করতে চাই'

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রায় সাত বছর কাটিয়ে দিলেও বাংলাদেশ জাতীয় দলে খুব বেশি সুযোগ পাননি অফস্পিনার নাঈম হাসান। সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজদের বিকল্প হিসেবেই বেশি দেখা গেছে তাকে। তবে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবারের মতো টানা দুটি বিদেশের মাটিতে টেস্ট খেলেছেন। তিন ইনিংসে নিয়েছেন ৯টি উইকেট, যার মধ্যে ছিল একটি পাঁচ উইকেটের ঝলক।

দ্য ডেইলি স্টারের সামসুল আরেফীন খানের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে শ্রীলঙ্কা সফর, প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা বলেন নাঈম। তার সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ নিচে দেওয়া হলো—

দ্য ডেইলি স্টার: শ্রীলঙ্কায় অবশেষে বিদেশের মাটিতে টেস্ট খেললেন। প্রথম ইনিংসেই পাঁচ উইকেট। সিরিজ শেষে আপনার ঝুলিতে ৯ উইকেট। পারফরম্যান্সে কি আপনি সন্তুষ্ট?

নাঈম হাসান: আলহামদুলিল্লাহ, আমার পারফরম্যান্সে আমি খুশি। তবে যদি আমরা কোনো ম্যাচ জিততে পারতাম, তাহলে আরও ভালো লাগত। দলের জয়ে অবদান রাখতে পারা আমার জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। তবুও মনে করি, আমি আরও ভালো করতে পারতাম।

ডেইলি স্টার: বিদেশের মাটিতে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নেমে বোলিং করার অনুভূতি কি অন্যরকম ছিল?

নাঈম: সবাই বলছিল এটা আমার প্রথম (বিদেশের) ম্যাচ। কিন্তু আমি কখনো এমনভাবে ভাবিনি। কারণ এর আগেও 'এ' দল, অনূর্ধ্ব-১৯ দল, ইমার্জিং দলে খেলেছি। তবে এটা সত্যি, অনেকদিন পর খেলা হলে অন্যরকম লাগে। শ্রীলঙ্কা সফরের আগে নিউজিল্যান্ড 'এ' দলের বিপক্ষে খেলেছি, সেটা অনেক সাহায্য করেছে। মনে করি, শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য আমার প্রস্তুতি ভালো ছিল।

ডেইলি স্টার: দীর্ঘ বিরতির পর যখন খেলেন, কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেন?

নাঈম: খেলার বাইরে আমার আর কিছু করার নেই। আমি নিয়মিত অনুশীলন করি, রুটিন অনুসরণ করি। বাংলা টাইগার্স ক্যাম্পে আমরা নিয়মিত অনুশীলন করি। আমি সবসময় প্রস্তুত থাকার চেষ্টা করি এবং সুযোগের অপেক্ষায় থাকি। অনেক সময় পারফরম্যান্স আপনার হাতে থাকে না। কিন্তু পরিশ্রম করে যেতে হবে, আর আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে। অনেক সময় ভালো প্রস্তুতি নিয়েও কাঙ্ক্ষিত ফল আসে না। তবুও শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

ডেইলি স্টার: ক্যারিয়ারে আপনাকে প্রায়ই টেস্টে তৃতীয় বা চতুর্থ স্পিন বিকল্প হিসেবে দেখা গেছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখেন?

নাঈম: আমি নিজেকে তৃতীয় বা চতুর্থ বিকল্প হিসেবে ভাবি না। অবশ্যই খারাপ লাগে যখন খেলতে পারি না। তবে আমার কাছে দলই সবার আগে। আমি সবসময় ভাবি, যখনই সুযোগ পাব, নিজের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করে দলের জয়ে অবদান রাখতে হবে। যদি নিজেকে তৃতীয় বা চতুর্থ অপশন ভাবি, তাহলে সেই খিদেটাই থাকবে না।

ডেইলি স্টার: সাত বছরে মাত্র ১৪টি টেস্ট। নিজেকে কি দুর্ভাগা মনে হয়?

নাঈম: আমি নিজেকে এমনটা ভাবি না। যেমন ভারতের দলে যখন হরভজন (সিং) খেলতেন, তখনও (রবিচন্দ্রন) আশ্বিন সুযোগ পেয়ে আজ ৫০০'র বেশি টেস্ট উইকেট নিয়েছেন। আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ছিলাম, তখনই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই ২৪ বা ২৫ বছর বয়সে জাতীয় দলে আসে। কিন্তু আমি সাড়ে ১৭ বছর বয়সেই জাতীয় দলে এসেছি। এই দিক দিয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আমি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় দলে যোগ দিয়েছিলাম। সবাই ভাবে আমি দুর্ভাগা, কিন্তু আমি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করতে চাই এবং নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। এই সাত বছরে অনেক কিছু শিখেছি, যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। অনূর্ধ্ব-১৯ এর অনেক সতীর্থ এখন জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছে বা সাম্প্রতিক সময়ে পেয়েছে। সব মিলিয়ে আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলেই ভাবি।

ডেইলি স্টার: আপনি কি নিজেকে শুধু লাল বলের খেলোয়াড় ভাবেন, নাকি সাদা বলেও খেলতে চান?

নাঈম: আমি সাদা বলের ক্রিকেটেও নিজেকে প্রস্তুত করছি। যখনই সুযোগ পাব, প্রমাণ করতে চাই। বিশেষ করে ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতেই বেশি পছন্দ করি। টি-টোয়েন্টিও খেলি। এ বছর বিপিএলে কোনো ম্যাচ খেলতে পারিনি, তবে আগের মৌসুমগুলোতে খেলেছি। গত বছর এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে বল ও ব্যাট দুই বিভাগেই ভালো করেছি।

ডেইলি স্টার: ঘরোয়া ক্রিকেটে আপনি ভালো ব্যাটিং করেন। ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগ দিলে কি একাদশে জায়গা পাকা হতো?

নাঈম: ব্যাটিং নিয়েও আমি কাজ করছি। শ্রীলঙ্কায় দুটি ম্যাচেই শুরুটা ভালো হয়েছিল, কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারিনি। আশা করি, পরেরবার একই ভুল করব না।

ডেইলি স্টার: বয়স এখনো মাত্র ২৫, তাই বয়স আপনার অনুকূলেই। ক্যারিয়ারের শেষ লক্ষ্য কী?

নাঈম: আমি চাই ক্যারিয়ার শেষ হোক ৩৫০টি টেস্ট উইকেট নিয়ে।

ডেইলি স্টার: বাংলাদেশের পরবর্তী টেস্ট সিরিজ আগামী নভেম্বরে, প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। এই চার মাসের পরিকল্পনা কী?

নাঈম: আমি বাংলা টাইগার্স ক্যাম্পে নিয়মিত অনুশীলন করছি। বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিটনেস সবকিছু নিয়েই কাজ করছি। 'এ' দলের কিছু ম্যাচ আছে। সুযোগ পেলে অস্ট্রেলিয়ায় ভালো করতে চাই। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হবে, সেখানেও ভালো করার লক্ষ্য আছে।

Comments

The Daily Star  | English
honor smartphone inside

How to build a smartphone

Smartphones feel inevitable in the hand, yet each one begins as a set of drawings, components and hypotheses. The journey from concept to finished device is a carefully sequenced collaboration between design labs, supplier networks and high-throughput assembly lines. In leading electronics hubs across Asia, that journey can take as little as days once a design is frozen and parts are on site.

3h ago