ওয়াশিংটন ও জাদেজার সেঞ্চুরিতে ড্র ম্যানচেস্টার টেস্ট

প্রথম ইনিংসের বড় লিডে জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ইংল্যান্ড। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই জোড়া শিকার ধরে সেই সম্ভাবনা আরও জোরালো করেছিলেন ক্রিস ওকস। তবে আগের দিন লোকেশ রাহুল ও শুবমান গিলের প্রতিরোধের পর শেষ দিনে ওয়াশিংটন সুন্দর ও রবীন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ড্রই হলো ম্যানচেস্টার টেস্টের ফলাফল।

মূলত ইংল্যান্ডের জয়রথ রুখে দিল ভারতের বিধ্বংসী ব্যাটিং। তিন ব্যাটার -গিল, জাদেজা ও ওয়াশিংটন তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। যার প্রথমটা করেন অধিনায়ক নিজেই। তার দেখানো পথ ধরে এদিন যোদ্ধার মতো লড়াই করে তিন অঙ্কের দেখা পান ওয়াশিংটন ও জাদেজাও। ৪ উইকেটে ৪২৫ রান করার পর ড্র মেনে নেয় ইংল্যান্ড। তখনও দিনের খেলা বাকি ছিল আরও ১০ ওভার।

এই ড্রয়ের পর এখন সিরিজের ফয়সালা হবে ওভালে। ২০ দিন ধরে টান টান উত্তেজনার পর ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে, কিন্তু পঞ্চম টেস্টে জয় থেকে তাদের আটকে দিয়েছে ভারতের পাঁচ সেশন জুড়ে টিকে থাকা আপসহীন ব্যাটিং। এদিন মাত্র দুটি উইকেট হারিয়েই ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেলেছে সফরকারীরা। অধিনায়ক স্টোকসের ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ড্র এটি।

অথচ চতুর্থ দিনের লাঞ্চে ভারতের অবস্থা ছিল করুণ। ১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল তারা। তখনও ৩০০ রানের বেশি পিছিয়ে। কিন্তু সেখান থেকেই এক অন্য ভারতের পরিচয় মিলে। গিল ও রাহুল গড়েন ১৮৮ রানের জুটি, এরপর ওয়াশিংটন ও জাদেজা গড়লেন অপরাজিত ২০৩ রানের মহাকাব্যিক জুটি। তাতে নিশ্চিত হয় ভারতের পরাজয় নয়, ড্র।

ম্যাচের শেষটা হয়ে উঠেছিল যেন ব্যঙ্গচিত্র। শেষ ঘণ্টার শুরুতে ড্র প্রস্তাব দেন স্টোকস, জাদেজা ও ওয়াশিংটনের রান তখন যথাক্রমে ৮৯ ও ৮০। কিন্তু গিল তাতে কর্ণপাত করেননি; বরং তার দুই অলরাউন্ডারকে শতকের স্বাদ নিতে দেন। ইংল্যান্ড বিরক্তিতে ছুড়ে দিতে থাকে ঘণ্টায় ৩৫ মাইল গতির 'লোপ্পা' সব বল। আর দুই জনই শতক পূর্ণ করেন সেই বলেই। জাদেজা সেঞ্চুরির পর স্ট্রেট সিক্স মেরে চিৎকার করেন, আর ওয়াশিংটন দুই রান নিয়ে শান্ত ভঙ্গিতে হাত তোলে।

আগের দিনের দুই উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। তবে নার্ভাস নাইন্টিজে রাহুল আউট হলেও সেঞ্চুরি তুলেই বিদায় নেন গিল। ১০৩ রানে আর্চারের বলে আউট হন তিনি। এরপর জাদেজা ও ওয়াশিংটনের সেই মহাকাব্যিক জুটি। যেখানে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন জাদেজা, আর ওয়াশিংটন করেন অপরাজিত ১০১ রান।

এভাবে শেষ হয় এক রোমাঞ্চকর টেস্ট, যেন এক অদ্ভুত অবসান। পাঁচ দিনে পড়েছে মাত্র ২৪ উইকেট, অথচ প্রায় প্রতিটি সেশনে ছিল নাটকীয়তা।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

17h ago