ব্যাটিংয়ে আক্রমণাত্মক মাত্রা যোগ করার চেষ্টায় অমিত

বর্তমান জাতীয় লিগে রান করার প্রক্রিয়া নিয়ে অমিত বলেন, 'আমি সবসময় এভাবে খেলি না। এই ম্যাচে, আসলে পুরো টুর্নামেন্টেই আমি এভাবে খেলছি।'
Amite Hasan

প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে গত বছর আলো ছড়িয়ে নজরে এসেছিলেন অমিত হাসান। চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় টিকে থাকার নিবেদন দেখিয়ে জাতীয় দলের বিবেচনার কাছাকাছি চলে এসেছিলেন তিনি। তবে 'এ' দলের হয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি, এবার জাতীয় লিগেও শুরুটা ভালো হচ্ছিল না। অবশেষে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে ডানা মেলেছেন অমিত। ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন অনেকটা ওয়ানডে ঘরানায়। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে জানালেন, কেবল টিকে থাকা নয়, আরও সাবলীল গতিতে রান আনার চেষ্টা করছেন তিনি।

গতকাল সিলেটে ম্যাচের চতুর্থ দিনে তার দল রাজশাহী বিভাগকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে। এই ম্যাচের মূল আকর্ষণ ছিল প্রথম ইনিংসে ২৫১ বলে খেলা অমিতের দুর্দান্ত ২১৩ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মিলিয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা ব্যাট করে ২২১ বলে নিজের দ্বিতীয় প্রথম-শ্রেণীর ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন অমিত। লাল বলের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি ২১৩ রানে আউট হন।

তার এই ঝলমলে ইনিংসে ছিল ২৮টি চার ও একটি ছক্কা। এরপরও ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটার মনে করছেন, পিচে আরও কিছু রান রেখে এসেছেন তিনি।

আউট হওয়ার পর কেমন লাগছিল জানতে চাইলে তিনি হাসিমুখেই উত্তর দেন, 'আউট হওয়ার পর মনে হচ্ছিল, আমি আরও ৪০-৫০ রান করতে পারতাম।'

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের স্পোর্টিং উইকেটে দারুণ সব ড্রাইভ ও ব্যাকফুট পাঞ্চ খেলেছেন অমিত। এতে আক্রমণ ও রক্ষণের মিশ্রণ এবং তার খেলার নতুন ধরন ফুটে উঠেছে। ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেটে তিনি একজন পরীক্ষিত পারফর্মার। ২০২৪ সালের এনসিএল এবং বিসিএল-এ যথাক্রমে সর্বোচ্চ এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে তিনি তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

অতীতে তিনি মন্থর গতিতে রান তুললেও চলমান এনসিএলে তার স্ট্রাইক রেট ৮০-র কাছাকাছি, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম-শ্রেণীর গড় স্ট্রাইক রেট ৫০.২৬-এর চেয়ে অনেক বেশি। এটি তার মানসিকতায় আসা সচেতন পরিবর্তনেরই ইঙ্গিত দেয়।

বর্তমান জাতীয় লিগে রান করার প্রক্রিয়া নিয়ে অমিত বলেন, 'আমি সবসময় এভাবে খেলি না। এই ম্যাচে, আসলে পুরো টুর্নামেন্টেই আমি এভাবে খেলছি।'

সিলেটের কোচ রাজিন সালেহ তাকে আক্রমণ ও রক্ষণের মাঝে একটা ভারসাম্য রাখার চিন্তা করতে বলেছিলেন, 'আমি রাজিন সালেহ স্যারের [সিলেটের কোচ] সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি আমাকে খুব বেশি রক্ষণাত্মক বা খুব বেশি আক্রমণাত্মক না হতে বলেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন আমি যেন স্বাভাবিক খেলাটা খেলি এবং বলের মেধা অনুযায়ী খেলি। আমার মনে হয় এই কৌশলটি বেশ কার্যকর কারণ এটি বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।'

রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচে অমিতকে দেশের দ্রুততম পেসার নাহিদ রানাকে সামলাতে হয়েছে, নাহিদকে সামলানো নিয়ে অমিত বলেন, 'সে [রানা] সহজাতভাবেই খুব জোরে বল করে এবং তার বাউন্সার খুব ভালো। আমার পরিকল্পনা ছিল, সে যখন বাউন্সার দেবে, আমি চ্যালেঞ্জ না নিয়ে বলগুলো ছেড়ে দেব। আর পরিকল্পনা ছিল, সে যদি এলোমেলো বল করে, তবেই আমি শট খেলব।'

অমিত এখনো জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) খেলোয়াড় নিলামেও অবিক্রীত থেকে গেছেন। তবে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জানিয়েছেন, এসব নিয়ে তিনি মোটেও বিচলিত নন, 'প্রত্যেক খেলোয়াড়ই জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখে এবং আমিও এর ব্যতিক্রম নই। যেহেতু আমি এখন এনসিএল খেলছি, তাই আপাতত সেখানেই মূল মনোযোগ দিচ্ছি। [বিপিএল নিয়ে] কোনো আক্ষেপ নেই, এটা আমার ভাগ্য। দলে নেওয়াটা পুরোপুরি মালিকদের সিদ্ধান্ত।'

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia laid to eternal rest

Buried with state honours beside her husband Ziaur Rahman

9h ago