তবে কি ‘বাজবল’ বিপ্লবের পতন?
ইংলিশ ক্রিকেটকে তিন বছর ধরে চনমনে রাখা 'বাজবল' বিপ্লব এখন যেন চুপসে যাওয়া নাম। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে একের পর এক ব্যর্থতার পর অ্যাশেজেও বাজবল থাকল অকেজো। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে মাত্র ১১ দিনেই টেস্ট সিরিজ হারল বেন স্টোকসের দল। এতে প্রশ্ন উঠেছে আলোচিত 'বাজবল' বিপ্লব কি পতন হয়েছে?
বাজবলের প্রবক্তা—কোচ ব্রেন্ডন 'বাজ' ম্যাককালাম এবং অধিনায়ক বেন স্টোকস হয়তো এর ভিন্ন ব্যাখ্যা দেবেন এবং দাবি করবেন যে, ইংল্যান্ডের 'মরণ-পণ' খেলার এই ধরনকে সংস্কার করে আবার ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।
বাস্তবতা হলো, যে সিরিজ ঘিরে এত প্রত্যাশা ছিল এবং যা এখন পর্যন্ত প্রাপ্তির খাতায় শূন্য হয়ে আছে, সেই সিরিজের শেষে যে তিক্ত ময়নাতদন্ত অপেক্ষা করছে, তাতে এই কৌশলের টিকে থাকা অসম্ভব বললেই চলে।
সফরে আসা ইংল্যান্ড দলগুলোর জন্য তিন টেস্টেই অ্যাশেজ ট্রফি খোয়ানো বিরল কিছু নয়; অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গত তিনটি সিরিজের ফলাফলও একই রকম ছিল। কিন্তু এবারের ব্যর্থতা দুই দেশের সমর্থকদের জন্যই বিশেষভাবে পীড়াদায়ক হবে, কারণ সবাই একটি সত্যিকারের লড়াইয়ের আশা করেছিলেন।
সিরিজের আগে ইংল্যান্ড সমর্থকরা দলের অনস্বীকার্য প্রতিভা দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন এবং খেলোয়াড়দের সেই প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করেছিলেন যে—এবার সবকিছু আলাদা হবে। তাদের বিশ্বাস করতে বলা হয়েছিল যে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতি সব ঠিকঠাক আছে। পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্টের আগে 'ইংল্যান্ড লায়ন্স'-এর বিপক্ষে মাত্র একটি প্রস্তুতি খেলে ইংল্যান্ড, সেটা বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের কাছ থেকে ট্রফিটি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নামার জন্য যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলো শুরু থেকে।
সাবেক ইংল্যান্ড ক্রিকেটাররা যারা এই হালকা প্রস্তুতির ওপর প্রশ্ন তুলেছিলেন, স্টোকস তাদের 'হ্যাজ-বিন' (যাদের সুদিন ফুরিয়ে গেছে) বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। যদিও পরবর্তীতে এই শব্দটি ব্যবহারের জন্য তিনি ক্ষমা চান, তবে তাদের উদ্বেগ তিনি উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
অ্যাডিলেড ওভালে রোববারের ম্যাচে ৮২ রানে হেরে এখন সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে ইংল্যান্ড। এমন পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ডের দায়সারা প্রস্তুতি, টেস্টগুলোর মাঝে ম্যাচ প্র্যাকটিসের অভাব এবং সমুদ্র সৈকতের রিসোর্ট নূসা হেডসে দীর্ঘ বিরতি কাটানোকে অনেক সমর্থকের কাছে এখন 'অহংকার' বা অতি-আত্মবিশ্বাসের চরম বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হবে।


Comments