এমবাপের 'প্রথমে' লড়াইয়ে রইল রিয়াল

ক্যারিয়ারে তিনশর বেশি গোল করেছেন কিলিয়ান এমবাপে। কিন্তু এর আগে কখনোই ফ্রি কিক থেকে সরাসরি গোল পাওয়া হয়নি তার। এদিন সেই কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে গেলেন এই ফরাসি তারকা। তার অন্যরকম 'প্রথমে' জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তাতে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান ঘুচিয়ে শিরোপা লড়াইয়েও টিকে রইল দলটি।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচে লেগানেসের বিপক্ষে জয় পেতে ঘাম ছুটে গেছে রিয়াল মাদ্রিদের। শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের জয়ের তিন পয়েন্ট তাদের শিরোপার লড়াইয়ে তাদের টিকিয়ে রাখলেও, এই জয় আলোর চেয়ে ছায়াই ফেলেছে বেশি।

এদিন দক্ষিণ আমেরিকান খেলোয়াড়দের ছাড়াই মাঠে নামা রিয়াল শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। চেষ্টা চালালেও, লেগানেসের শক্তিশালী রক্ষণের বিপক্ষে ছন্দ খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। মাদ্রিদের বল হারানোর সুযোগ নিয়ে লেগানেস বারবার পাল্টা আক্রমণে উঠে। লেগানেস হুমকি দিলেও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করে রিয়ালই। দুর্ভাগ্যবশত, কাজে লাগাতে পারেনি।

ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আনচেলত্তির দলের হাতে থাকলেও, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস—গোলের অভাব ছিল স্পষ্ট। এরমধ্যেই বিতর্কিত এক পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যায় রিয়াল। আর্দা গুলারের ওপর অস্কারের 'সন্দেহজনক' ফাউলের কারণে পেনাল্টির বাঁশি বাজান মাঠের রেফারি। ৩২তম মিনিটে নেওয়া স্পটকিক থেকে দলকে এগিয়ে দেন এমবাপে।

গোলের পর খেলা পুনরায় শুরুর পরপরই ৩৩তম মিনিটে রিয়ালের রক্ষণভাগের ভুল কাজে লাগিয়ে গোল আদায় করে নেন দিয়াগো। দুর্ভোগ এখানেই শেষ হয়নি, ৪১তম মিনিটে ব্রাহিমের বল হারানোর সুযোগ নিয়ে অস্কারের পাস থেকে রাবা গোল করে লেগানেসকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। রিয়াল ফাউল ও হ্যান্ডবলের দাবি জানালেও রেফারি গোল বহাল রাখেন। বার্নাব্যু তখন স্তব্ধ—কেউ কল্পনাও করেনি লেগানেসের এমন প্রত্যাবর্তন।

তবে দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই সমতা ফেরায় রিয়াল। বেলিংহ্যামের শট দিমিত্রোভিচ ঠেকালে ব্রাহিম দিয়াজ গোলের সামনে থেকে শট নিলে তা গোললাইন থেকে ফেরান টাপিয়া। বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে বেলিংহ্যাম রিবাউন্ড থেকে গোল আদায় করে নেন। দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল আগ্রাসী থাকলেও দিয়েগো একবার রিয়াল গোলরক্ষক লুনিনের সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান অবস্থানে গোল করতে ব্যর্থ হন।

রিয়ালের রক্ষণ এলোমেলো থাকলেও আক্রমণ ছিল প্রবল। ব্রাহিমের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে, এবং ম্যাচটি একপ্রকার লটারি হয়ে ওঠে। লেগানেস আরও একবার এগিয়ে যেতে পারত, কিন্তু মাদ্রিদের রক্ষণভাগের ভুল কাজে লাগাতে পারেনি। আনচেলত্তি তখন ব্রাহিম ও গুলারের পরিবর্তে ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোকে নামান, যা রিয়ালের আক্রমণ আরও তীব্র করে তোলে।

অবশেষে ৭৬তম মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে যায়, যখন এমবাপে ফ্রি-কিক থেকে গোল করেন। তবে এটি এসেছিল বিতর্কিত এক ফাউল থেকে, যেখানে রদ্রিগোর ওপর টাপিয়ার ফাউল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরপর সমতায় ফিরতে ঝাঁপিয়ে পড়ে লেগানেস। শেষ মুহূর্তগুলো রিয়ালের জন্য ভয়াবহ হয়ে ওঠে। দারুণ সুযোগও নষ্ট করে। পেনাল্টির জোরালো আবেদনও জানায়। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি রিয়াল।

এই জয়ে বার্সেলোনাকে ছুঁয়ে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২৯ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট তাদের। এক ম্যাচ কম খেলা বার্সার পয়েন্টও সমান। ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s deadly order

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

53m ago