গার্সিয়ার দেয়াল ও রাশফোর্ডের ঝলকে দারুণ সূচনা বার্সার

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ স্বপ্নযাত্রার শুরুটা দারুণভাবেই করল বার্সেলোনা। ঝলমলে ফুটবলের প্রদর্শনী নয় বরং দৃঢ় মনোবল, গোলের সামনে দুর্দান্ত নিখুঁততা আর লড়াকু মানসিকতা দিয়ে। নিউক্যাসল অনেক চেষ্টা করলেও বার্সার রক্ষণভাগের আত্মনিবেদনে আর গোলপোস্টে অসাধারণ হুয়ান গার্সিয়ার নিরাপত্তার দেয়াল ভেদ করা সম্ভব হয়নি তাদের জন্য।

সেইন্ট জেমস পার্কে বৃহস্পতিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ইংলিশ ক্লাব নিউক্যাসলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নিজেদের চিরচেনা ছন্দময় খেলা না খেলেও কাতালানরা ইংল্যান্ডের শক্তিকে কাবু করেছে মূলত মার্কাস রাশফোর্ডের জোড়া গোলের কল্যাণে।

হান্সি ফ্লিক এদিন সবশেষ ভ্যালেন্সিয়াকে বিধ্বস্ত করা আগের দলের সঙ্গে কিছু পরিবর্তন এনে দলে নিয়েছেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং, আরাহো ও বিশ্রাম কাটিয়ে ফেরা রাফিনিয়াকে। নিউক্যাসলের শুরুর একাদশে ভোল্টেমাডে না থাকাটা ছিল বড় বিস্ময়। ফ্লিক জানতেন, প্রথমে প্রতিরোধ, তারপর আঘাত -এই কৌশলই কার্যকর হবে। এবং সত্যিই কাজ দিয়েছে তা।

খেলার আগে গ্যালারিতে ঝুলছিল ব্যানার, 'ব্যাক ইন ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট', ঠিক এসি/ডিসি ব্যান্ডের বিখ্যাত ফন্টে, তাদের গানের তালে। দর্শকদের উচ্ছ্বাসে শুরুটা হলো যেনো এক রক কনসার্ট। খেলাও ঠিক তেমন, টন আর্মির অদম্য সমর্থনে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিউক্যাসল। ম্যাচের শুরুতেই তীব্র চাপ, দুই মিনিটের মাথায়ই বিপজ্জনক আক্রমণ। তবে গার্সিয়ার দৃঢ়তায় রক্ষা পায় বার্সা। প্রথম ক'টা মিনিট ছিল যেন আগুনঝরা দুঃস্বপ্ন।

তবু ধীরে ধীরে সামলে নেয় বার্সেলোনা। জুলস কুন্দের দূরপাল্লার শটে প্রথমবার হুমকি জানায় দলটি। পাসের পর পাস গেঁথে একসময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়, যদিও নিউক্যাসল পাল্টা আক্রমণে ভয় দেখাচ্ছিল বারবার। গার্সিয়ার চমৎকার সেভগুলোতে টিকে থাকে অতিথিরা।

দ্বিতীয়ার্ধেও আবারো নিউক্যাসলের ঝড়ো শুরু। কিন্তু বার্সা ছিল আত্মত্যাগী ও একাগ্র। তাদের ভরসা তখন গার্সিয়ার। টোনালির শট তিনি অসাধারণভাবে রুখে দেন। চাপ সামলে হঠাৎই আঘাত আনে বার্সা। রাফিনিয়ার দারুণ ট্রানজিশন, কুন্দের নিখুঁত ক্রস আর রাশফোর্ডের দুর্দান্ত হেড, লিড নেয় কাতালানরা।

গোল খাওয়ার পর কোচ এডি হাও একসঙ্গে চারটি পরিবর্তন আনেন, মাঠে নামালেন ভোল্টেমাডেকেও। কিন্তু তখনো বার্সা দৃঢ়। রাশফোর্ড, যাকে দর্শকরা অবিরাম দুয়ো দিয়ে উত্যক্ত করছিল, দ্বিতীয়বার গোল করে চুপ করালেন পুরো স্টেডিয়াম। নিউক্যাসলের ডিফেন্ডারদের বাজে ক্লিয়ারেন্স থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে বল পাঠালেন জালে।

তবে ০-২ ব্যবধানেও নিশ্চিন্ত হতে পারেনি বার্সা। গর্ডনের গোলে ব্যবধান কমে আসে। শেষ পর্যন্ত পেদ্রির বল ধরে রাখার মুন্সিয়ানা, গার্সিয়ার পরপর সেভ, আর গোলরক্ষক পোপের এক অবিশ্বাস্য সেভের পরও বার্সা লড়াই চালিয়ে গেছে শেষ পর্যন্ত।

Comments