ঘটনাবহুল লড়াইয়ে ১০ জন নিয়ে মোহামেডানকে উড়িয়ে দিল বসুন্ধরা

দ্বিতীয়ার্ধে আধা ঘণ্টার বেশি সময় ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে হলো বসুন্ধরা কিংসকে। সেই ঘাটতি পেরিয়ে প্রতিপক্ষকে চেপে বসার সুযোগ না দিয়ে নিজেদের দারুণভাবে মেলে ধরল দলটি। ঘটনাবহুল লড়াইয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে উড়িয়ে চ্যালেঞ্জ কাপের শিরোপা ধরে রাখল তারা।
শুক্রবার কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতেছে বসুন্ধরা। দলটির কোচ হিসেবে ট্রফি দিয়ে যাত্রা শুরু করলেন আর্জেন্টাইন মারিও গোমেজ। তাদের পক্ষে জোড়া লক্ষ্যভেদ করেন দোরিয়েলতন গোমেজ। এছাড়া, জালের ঠিকানা খুঁজে নেন রাফায়েল আগুস্তো ও ইমানুয়েল সানডে। মোহামেডানের একমাত্র গোলদাতা হলেন মোজাফফর মোজাফফরভ।
এক ম্যাচের চ্যালেঞ্জ কাপ দিয়ে পর্দা উঠল ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুমের। ম্যাচটি আয়োজিত হয় আগের মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন (মোহামেডান) ও ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন (বসুন্ধরা) দল দুটির মধ্যে।

গত বছর চ্যালেঞ্জ কাপের প্রথম আসরেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সেবার কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা ৩-১ গোলে হারিয়েছিল মোহামেডানকে। একপেশে স্কোরলাইনের পাশাপাশি আরেকটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবার। ম্যাচের শেষদিকে গ্যালারি থেকে ফ্লেয়ারসহ নানা কিছু মাঠে ছোঁড়া হলে খেলা কয়েক মিনিটের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অনাকাঙ্ক্ষিত কাণ্ডটি করেন মোহামেডানের ভক্ত-সমর্থকরা।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, ম্যাচের পাঁচটি গোলের সবকটি আসে বিদেশি ফুটবলারদের পা থেকে। তবে মাঠ অপ্রস্তুত থাকায় খেলা শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের দশ মিনিট পর। চারিদিকের টাচলাইনের বাইরে ছিল বড় বড় ঘাস। গ্যালারিতে উপস্থিত কয়েকশ দর্শক দুই দলকে উৎসাহ দিলেও মাঠের বেহাল অবস্থায় খেলোয়াড়দের স্বাভাবিক পারফরম্যান্সে বাধা পড়ে।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের সুযোগ পায় মোহামেডান। ডি-বক্সের বাইরে তারিক কাজী ফাউল করলে ফ্রি-কিক মেলে তাদের। কিন্তু মোজাফফরভের নেওয়া শট প্রতিহত হয় রক্ষণদেয়ালে।
অষ্টম মিনিটে দোরিয়েলতনের সফল স্পট-কিকে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। ডি-বক্সে তাকেই পেছন থেকে ফাউল করে বসেন মোহামেডান অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিঠু। তাই রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। তবে কিংসের লিড টিকতে পারে মাত্র পাঁচ মিনিট। মিঠুর লম্বা থ্রো ইন ফেরানোর চেষ্টায় আবার ফাউল করেন তারিক। এবার ডি-বক্সের ভেতরে হওয়ায় পেনাল্টি পায় মোহামেডান। নিখুঁত শটে খেলায় সমতা ফেরান মোজাফফরভ।
এরপর দুই দলই পরিকল্পনাহীনভাবে খেলতে থাকে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ছড়ায় কিছুটা উত্তেজনা। তবে দোরিয়েলতনের দুর্বল শট রুখে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসেন।

বিরতি শেষে দ্বিতীয়ার্ধও শুরু হয় একই কায়দায়। ৬৩তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় বসুন্ধরা। মিনহাজুর আবেদিন রাকিবকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ডসহ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সোহেল রানা। তবে একজন বেশি নিয়ে খেলার ফায়দা তুলে নিতে পারেনি মোহামেডান। উল্টো কৌশল পাল্টে তাদেরকে কাঁপিয়ে দেয় গোমেজের শিষ্যরা।
৭২তম মিনিটে ফের লিড নেয় বসুন্ধরা। সোহেল রানা জুনিয়রের কর্নার বিপদমুক্ত না হলে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের চোখ ধাঁধানো ভলিতে গোল করেন রাফায়েল। ছন্দ ধরে রেখে ব্যবধান বাড়াতে সময় নেয়নি কিংস। দুই মিনিট পর দোরিয়েলতনের বুদ্ধিদীপ্ত পাস ধরে সুজনকে পরাস্ত করেন সানডে। গত মৌসুমে সানডে খেলেছিলেন মোহামেডানে।
৮৫তম মিনিটে দর্শনীয় গোলে বসুন্ধরার শিরোপা ধরে রাখা একরকম নিশ্চিত করে ফেলেন দোরিয়েলতন। শেষদিকে মোহামেডান কয়েকটি পরিবর্তন আনলেও ফল মেলেনি। তাই হারের হতাশা নিয়ে নতুন মৌসুম শুরু হলো আলফাজ আহমেদের শিষ্যদের।
Comments