আফ্রিকা কাপের মঞ্চে প্রত্যাশার ভারে চাপে মরক্কো

আফ্রিকার ফুটবল মানচিত্রে সবচেয়ে আলোচিত আসর আফ্রিকা কাপ অব নেশনস শুরু হতে যাচ্ছে রোববার। আর সেই শুরুতেই সব আলো, সব প্রত্যাশা আর সব চাপ একসঙ্গে এসে পড়েছে স্বাগতিক মরক্কোর ওপর। নিজেদের মাঠে, নিজেদের দর্শকদের সামনে দীর্ঘ ৪৯ বছরের শিরোপা-খরা ঘোচাতে মরিয়া 'আটলাস লায়ন্স'রা।

রোববার সন্ধ্যায় রাবাতের নতুন ৬৯ হাজার দর্শক ধারণক্ষম প্রিন্স মৌলাই আবদেল্লাহ স্টেডিয়ামে তুলনামূলক দুর্বল কমোরোসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আফকন অভিযান শুরু করবে মরক্কো। ফিফা র‍্যাংকিংয়ে আফ্রিকার সেরা দল হিসেবে (বিশ্বে ১১তম) নামলেও, স্বাগতিক হওয়াটাই যেন তাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

এই টুর্নামেন্টে মরক্কোর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের তালিকায় রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল, শিরোপাধারী আইভরি কোস্ট, মোহাম্মদ সালাহর নেতৃত্বাধীন মিসর এবং ভিক্টর ওসিমেনের শক্তিশালী নাইজেরিয়া। নববর্ষ পেরিয়ে ১৮ জানুয়ারি ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে এই মহাদেশীয় লড়াইয়ের।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনাল খেলা মরক্কো এএফকনে আসছে টানা ১৮ ম্যাচ জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়ে। যা একদিকে আত্মবিশ্বাস, অন্যদিকে প্রত্যাশার চাপ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। চোট কাটিয়ে তারকা ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমির ফেরাও সেই স্বপ্নে নতুন করে রং ছড়িয়েছে। তবে স্বপ্ন পূরণের পথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যে ভয়ংকর কঠিন, তা ভালো করেই জানে মরক্কো।

মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই শনিবার স্পষ্ট ভাষায় লক্ষ্য জানিয়ে বলেন, 'আমি সব সময়ই বলেছি নিজেদের দর্শকদের সামনে, ঘরের মাঠে এই আফকন জেতাই আমাদের উদ্দেশ্য। এই প্রত্যাশার কারণেই আফকন জেতা সবচেয়ে কঠিন হবে মরক্কোর জন্য। চাপটা ইতিবাচক, কিন্তু শিরোপা ছাড়া অন্য কিছু হলে সেটাই ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হবে।'

উল্লেখ্য, মরক্কো সর্বশেষ আফ্রিকা কাপ জিতেছিল ১৯৭৬ সালে। পিএসজির রাইট-ব্যাক ও আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলার আশরাফ হাকিমি নভেম্বরের শুরুতে গোড়ালির চোট পাওয়ার পর আর মাঠে নামেননি। তবু তিনি জানিয়েছেন, খেলতে পুরোপুরি প্রস্তুত।

'আমি ভালো অনুভব করছি,' বলেন হাকিমি।

যদিও রেগরাগুই ইঙ্গিত দিয়েছেন, গ্রুপ 'এ'-তে মালি ও জাম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ সামনে থাকায় কমোরোসের বিপক্ষে তাকে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে।

ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলের সাফল্যকেই বড় করে দেখছেন হাকিমি, 'আমি নিজেকে নিয়ে ভাবছি না। এক মিনিট খেললেও যদি দল জেতে, সেটাই আমার জন্য যথেষ্ট।'

সাম্প্রতিক সময় মরক্কোর ফুটবলে এসেছে ধারাবাহিক সাফল্য। তারা জিতেছে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ, আর চলতি সপ্তাহে দোহায় জর্ডানকে হারিয়ে ফিফা আরব কাপ জয়ের পর দেশজুড়ে সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।

Comments