চ্যাটজিপিটির কাছে চাকরি হারালেন কপিরাইটার

চ্যাটজিপিটির কাছে চাকরি হারালেন কপিরাইটার। প্রতিকী ছবি: সংগৃহীত
চ্যাটজিপিটির কাছে চাকরি হারালেন কপিরাইটার। প্রতিকী ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি প্রযুক্তি ভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের এক কপিরাইটারকে কোনো কারণ উল্লেখ না করেই চাকরিচ্যুত করা হয়। পরবর্তীতে ওই কর্মী জানতে পারেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এই সংবাদ প্রকাশ করেছে। 

২৫ বছর বয়সী অলিভিয়া লিপকিন ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান, চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর থেকে অফিসে তার কাজ কমে আসতে শুরু করে। এমনকি তার বস অভ্যন্তরীন মেসেজিং গ্রুপে তাকে 'অলিভিয়া/চ্যাটজিপিটি' হিসেবেও উল্লেখ করতে শুরু করেন।

অলিভিয়া আরও বলেন, 'চাকরি হারানোর পর তিনি দেখতে পান, অনেক ম্যানেজারই মানব কর্মী নিয়োগ দেওয়ার বদলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবটের মাধ্যমে কাজের পক্ষে কথা বলছেন। যুক্তি হিসেবে তারা বলছেন, একজন মানব কর্মীর তুলনায় এআই চ্যাটবটের পেছনে খরচ অনেক কম।

চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর থেকেই তিনি নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগ অনুভব করছিলেন বলে জানান অলিভিয়া।

চ্যাটবট এক পর্যায়ে তার চাকরি কেড়ে নিতে পারে, এমন সন্দেহ হচ্ছিল তার। শেষ পর্যন্ত এ আশঙ্কাই সত্য হল।

অলিভিয়া এখন কুকুর দেখাশোনার চাকরি করছেন। তার লিংকডইন প্রোফাইলে এপ্রিলের পর নতুন কোনো চাকুরির বিষয়ে তথ্য যোগ করেননি তিনি।

'অফিসভিত্তিক চাকরি থেকে আমি পুরোপুরি ছুটিতে আছি। মানুষ সাশ্রয়ী বিকল্প খুঁজছে, আর সেটি কখনোই মানব কর্মী নয়, সেটি হচ্ছে একটি রোবট', যোগ করেন তিনি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভাবনীয় উত্থানের ফলে অলিভিয়ার মতো অসংখ্য কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন।  

অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরাও ইতিমধ্যে বলছেন, তারা সাশ্রয়ী মূল্যে এসব প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করতে চান। আইবিএমের প্রধান নির্বাহী অরভিন্দ কৃষ্ণা বলেন, এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে করা সম্ভব, এমন কোনো কাজের জন্য কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠান হয় 'ধীরে চলো' নীতি গ্রহণ করবে, অথবা কর্মী নিয়োগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে। যদি আইবিএম এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে, তাহলে প্রতিষ্ঠানটির আনুমানিক ৭,৮০০ কর্মী চাকরি হারাবেন। 

লেখালেখির কাজে চ্যাটজিপিটির আশাতীত দক্ষতা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক খাতের লেখকদের (যেমন- টিভি অনুষ্ঠানের লেখক, স্ক্রিপ্ট ও কপিরাইটার, ইত্যাদি) উদ্বেগে ফেলে দিয়েছে।

যদিও চ্যাটজিপিটি যে একেবারে ত্রুটিমুক্ত, তা-ও নয়। চ্যাটবটটি খুবই বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে প্রায়ই ভুল তথ্য উপস্থাপন করে। তাই এর মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

9h ago