বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

হলের দখল নিতে হেলমেট-মাস্ক পরে হামলা, ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১২

হলে ঢুকে হামলাকারীদের একাংশ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই বাংলা হলের দখল নিতে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের হামলা ও পরবর্তীতে ২ গ্রুপের সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে হেলমেট ও মুখোশধারী কয়েকজন হামলা চালায়। এর জের ধরে ভোররাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের ২ পক্ষের সমর্থকরা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। তবে এখানে ক্রিয়াশীল ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের একটি বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও আরেকটি বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল রাত ১১টার পর ৩০-৩৫ জনের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে ঢুকে শের-ই বাংলা হলের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় গিয়ে তল্লাশি করে। তাদের মধ্যে কয়েক জন হেলমেট ও মাস্ক পরা ছিল। এ সময় তারা মুয়ীদুর রহমান (২৮), সাইমুন ইসলাম (২৬) ও আয়াতউল্লাহসহ (২৫) ১০-১২ জনের ওপর হামলা চালায়। হামলার পর ২ গ্রুপের সমর্থকদের সংঘর্ষ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মেয়রপন্থী ও মন্ত্রীপন্থী গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের যেসব ঘটনা চলে আসছে, গত রাতের হামলা ও সংঘর্ষ তারই ধারাবাহিকতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, মেয়রপন্থী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগ নেতা সিফাতের অনুসারী নাভিদসহ বেশ কয়েকজন অনেকদিন ধরে হলে উঠতে পারছিল না। মন্ত্রীপন্থী নেতা রক্তিম ও বাকিসহ তাদের একটি গ্রুপ শের-ই বাংলা হলে শক্ত অবস্থান নিয়ে ছিল।

এ অবস্থায় গত রাতে সাদিকপন্থী ছাত্রলীগের গ্রুপটি লাঠি, ধারালো অস্ত্র ও রড নিয়ে শের-ই বাংলা হলে ঢোকে। পরে ২ পক্ষের সংঘর্ষে বহিরাগতরাও যোগ দেয়।

এ বিষয়ে বরিশালের পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২টি গ্রুপ। এ ২টি গ্রুপের মধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে ভোর রাত পর্যন্ত অবস্থান করে। এই মুহূর্তে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক হারুন-আর রশিদ কে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, 'এ ঘটনায় ১২ জন আহত হলেও এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি আছে ৩ জন। সংঘর্ষ যাতে আরও না গড়ায় এজন্য হলের ছাত্র নয় এমন সবাইকে হল ত্যাগ করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

9h ago