পাঁচ মাস পর কুয়েটে ক্লাস শুরু

শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবার মুখর হয়ে উঠেছে কুয়েট। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ পাঁচ মাস ১০ দিন পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আজ মঙ্গলবার থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় আবার মুখর হয়ে উঠেছে কুয়েট।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্লাস শুরু হয়েছে। কোনো কোনো বিভাগে ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি চলছে। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে যেসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় আসেন, তাদের নিয়ে বাস ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছে। কেউ কেউ ভ্যান ও রিকশা-অটোরিকশাতে আসছেন।

তবে হঠাৎ ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী এখনো ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন অনেকে।

গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তাদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এরপর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী ক্লাস শুরুর নির্দেশ দেন এবং আনুষ্ঠানিক নোটিশ জারি করেন।

এর আগে, গত দু'দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, সাধারণ শিক্ষার্থী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন কুয়েট উপাচার্য।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একমত হয়েছেন, ক্লাস ও তদন্ত একসঙ্গে চলবে। এজন্য আজ থেকে ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সকাল থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে।'

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন, 'উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। প্রশাসন ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেন এবং শিক্ষকরা ক্লাসে যোগ দিচ্ছেন।'

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, 'নতুন উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি কার্যকর সমাধানের দ্বার খুলল। পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর আবার ক্লাস শুরু হয়েছে, এ খবরেই আমরা ভীষণ খুশি ও উচ্ছ্বসিত। সেশনজট ও শিক্ষা জীবনের অনিশ্চয়তা নিয়ে যে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছিল, তা অনেকটাই কেটে গেছে। ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে অনেকে ভালো লাগছে।'

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সংঘর্ষে অনেকে আহত হন। পরে আন্দোলনের মুখে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। এরপর ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন। ১০ জুন উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও নিয়োগপ্রক্রিয়া এতদিন পর্যন্ত অগ্রসর হয়নি।

ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখ থেকে টানা ১৬০ দিন (২৮ জুলাই) পর্যন্ত বন্ধ ছিল খুলনা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সব একাডেমিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ভিসি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক, একাডেমিক কার্যক্রমসহ সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ে। ভিসির অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট কিছুতেই নিরসন হচ্ছিল না। পরে গত ২৪ জুলাই বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অব. শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালীকে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়।

Comments

The Daily Star  | English

Ocean of mourners gather to pay tribute to Khaleda Zia

Crowds spilled over into surrounding areas, with large gatherings seen in Farmgate, Karwan Bazar and nearby localities

2h ago