ছাত্রলীগ প্রতিবাদ না করে ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে কলঙ্ক লেপন করেছে: ঢাবি ছাত্রদল

ছাত্রলীগের ২ কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন-অর-রশিদকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল।

একইসঙ্গে নিজেদের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্যাতনকারী এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ না করে ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে ছাত্রলীগ কলঙ্ক লেপন করেছে বলেও উল্লেখ করেছে  সংগঠনটি।

আজ রোববার ঢাবি ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম রক্ষাকর্তা এডিসি হারুন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে থানায় ধরে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে দাঁত ভেঙে ফেলেছে।

এতে বলা হয়, গত ১৫ বছর ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ সারাদেশে ক্যাম্পাসগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কয়েম করেছে। ছাত্রদলসহ সব বিরোধী ছাত্রসংগঠন এবং সাধারণ ছাত্রদের নির্মম নির্যাতন করেছে। নির্যাতিত, মুমূর্ষু ছাত্রদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ তাদের গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে আবার নির্যাতন করেছে। বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে বুনো উল্লাস করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

ছাত্রদল জানায়, পুলিশ বাহিনী যখন ভোট ডাকাতির দায়িত্ব নিয়েছে, তখন রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগের নেতারা টেন্ডার বাণিজ্য, প্রশ্নফাঁস এবং চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত হয়েছে। আজ তাদের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও ছাত্রলীগের কেউ কোনো প্রতিবাদ জানাতে সক্ষম হয়নি। এতেই বুঝা যায়, ছাত্রলীগ এখন নীতি-আদর্শহীন একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে। একজন নিম্নপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার ভয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রলীগ তটস্থ। সেই পুলিশ কর্মকর্তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধ করার পরও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ন্যূনতম সাহস ছাত্রলীগের নেতারা দেখাতে পারেনি। তারাও জানে যে, পুলিশের সঙ্গে মিলেমিশে পুলিশি রাষ্ট্রে তারা যে মাৎস্যন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছে তাতে তাদেরও বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতীতে পুলিশ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখন ছাত্রলীগের কোনো নেতাকে নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতে ভয় পাচ্ছে। পুলিশের অনুগ্রহ ভিক্ষা করে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের রাজনীতিতে টিকে থাকার অভিলাষের কারণে এখন পথে-ঘাটে ছাত্রনেতাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত হচ্ছে। নিজেদের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্যাতনকারী এক অফিসারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ না করে ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে ছাত্রলীগ কলঙ্ক লেপন করেছে।

এতে আরও জানানো হয়, ছাত্রলীগের মতো একটি পুরোনো ছাত্রসংগঠনের এমন অমর্যাদাকর অবস্থানের কারণে নিন্দা ও হতাশা প্রকাশ করেছে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। একইসঙ্গে দুজন ছাত্রলীগ নেতাকে নির্যাতনসহ অতীতের সব পুলিশি নির্যাতনের দায়ে এডিসি হারুনকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবিও জানিয়েছেন তারা।

 

Comments

The Daily Star  | English

From 2019 to 2025: How Ducsu election shows change

With this Ducsu poll being the first since the July uprising, I decided to witness history with my own eyes -- this time as a journalist and alumnus

11m ago