চা প্রেমী জাতির কাছে কফির আমেজ

ছবি: অর্কিড চাকমা

মিষ্টি গান আর মনোরম পরিবেশে সদ্য প্রস্তুত কফির ঐশ্বরিক ঘ্রাণই কফি সংস্কৃতির মূল কথা। পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে হোক বা মনোযোগী শিক্ষার্থীর ছোট কাজের জায়গা কিংবা অতি ব্যস্ত মানুষের ছোট্ট বিরতি, সবারই প্রিয় এমন একটি ক্যাফে।

প্রায় ১০ বছর আগেও বাংলাদেশে কফি সংস্কৃতির অস্তিত্ব ছিল না। কারণ, এ দেশের মানুষ নিখুঁত এক কাপ চায়ের মধ্যে খুঁজে নেন ভালবাসা। এমন একটি চা প্রেমী জাতির মধ্যে কফির সংস্কৃতি কীভাবে ছড়িয়ে পড়লো, সেই বিষয়টি বেশ মজার।

কফি শপে একটু ভিন্ন আমেজ আছে। তারা বাকি সবার চেয়ে ভিন্ন একটি পরিবেশ আপনার জন্য তৈরি করে। সেই পরিবেশ বাকি সবকিছুর থেকে আলাদা, যেখানে কিছুটা সময় কাটাতে আপনার ভালো লাগবে। প্রতিটি জনপ্রিয় ক্যাফেতে সেলফ ভর্তি বই ও সংবাদপত্র এবং বোর্ড গেম পাবেন। ধীরে ধীরে কফির স্বাদ নেওয়ার সঙ্গে উপভোগ করতে পারবেন আরও অনেক কিছু। এ যেন আপনার প্রাত্যাহিক জীবনের দৌড়াদৌড়ি, তুমুল গতিতে ছুটে চলার যে চিন্তা তা থেকে খানিকটা স্বস্তি দেবে। মনে হবে, আরও খানিকটা সময় থাকি না জীবনের কোলাহলের বাইরে।

কফির প্রতি আমার ভালোবাসা বেড়েছে ঢাকা ও এর আশেপাশের কফি সংস্কৃতি ক্রমশ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে। আমার অবশ্য বেশি আকর্ষণ দারুণ এক কাপ কফির জন্য দুর্দান্ত কফি বিন কেনা, বিভিন্ন নোট সম্পর্কে জানা এবং ঘরে ভালো কফি বানাতে নতুন সরঞ্জাম কেনাকাটায়।

আমি প্রায়ই আমার প্রিয় ক্যাফেতে যাই। কেবলই কফি খেতে যাই, তা নয়। যাই এই নিত্য কোলাহল থেকে কিছুটা সময় লুকিয়ে থাকতে। একটি ভালো বই, কয়েকটি ব্রাউনি, একটু উষ্ণ পানীয় উপভোগ করতে করতে যেন হারিয়ে যাই।

কিছু জিনিস সময়ের সঙ্গে বদলে যায়, আর কিছু জিনিস কখনোই বদলায় না। বাংলাদেশে কফি সংস্কৃতির প্রচলন তার মধ্যে একটি। দেশের কফি শপগুলো যতই বড় ও অভিনব হয়ে উঠুক না কেন, এক কাপ গরম দুধ চা খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা কিন্তু মানুষের কাটেনি। রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে সেই আড্ডার স্বাচ্ছন্দ্য যেন আমাদের আবেগকে জাগিয়ে রাখে।

আমাদের জীবন যেভাবে ব্যস্ত হয়ে উঠছে, যেভাবে আমাদের উদ্বেগ বাড়ছে, সেখানে প্রিয়জনের সঙ্গ উপভোগ করতে, নিজেকে কিছুটা স্বস্তি দিতে অদ্বিতীয় হতে পারে প্রিয় কফি শপে কাটানো সময়টুকু। এই সময়টুকু হবে একান্তই আমাদের, সেখানে আর সবাই থেকেও যেন নেই, সেখানে কোনো তাড়া নেই, সেখানে উদ্বেগ নেই, সেখানে নিত্যদিনের তুমুল গতিতে ছুটে চলার দুশ্চিন্তা নেই।

নুজহাত হাসান চৌধুরী; [email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Hopes run high as DU goes to vote today

The much-anticipated Ducsu and hall union elections are set to be held today after a six-year pause, bringing renewed hope for campus democracy.

3h ago