ক্যানবেরায় বহু ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের অংশগ্রহণে অমর একুশে উদযাপন

ক্যানবেরায় বহু ভাষা-সংস্কৃতির মানুষের অংশগ্রহণে অমর একুশে উদযাপন
ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় বহু ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে পালিত হলো শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। 

রাজধানী ক্যানবেরায় প্রভাতফেরিসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এসব আয়োজনে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি (এসিটি) সরকারের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত-কূটনৈতিকসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

ক্যানবেরার তেলোপিয়া পার্কে মানুকা সার্কিট ও নিউ সাউথ ওয়েলস স্ট্রিটের ক্রসরোডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রভাতফেরি সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে মানুকা ওভাল ঘুরে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শেষ হয়। 

এতে অংশগ্রহণ করেন অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি (এসিটি) সরকারের মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত-কূটনৈতিক, অষ্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ভাষা-ভাষীদের প্রতিনিধি, অষ্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী ও অভিবাসীগণ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ। অংশগ্রহণকারীরা অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় ভাষাশহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী, এ সি টি সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাসেল স্টিফেন স্মিথ, পরিবেশ মন্ত্রী রেবেকা ভাসারত, বহুসংস্কৃতি বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী পিটার কেইন, অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত মনপ্রিত ভোরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। এম আল্লামা সিদ্দিকী এ সময় ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত দীর্ঘ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাধারণ নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন। 

তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় ৭ হাজার ভাষার প্রতিটি জীবন্ত জাদুঘর এবং অনন্য জ্ঞানের আধার। প্রতিবছর এ ৭ হাজার ভাষার মধ্যে কমপক্ষে একটি ভাষা বিলুপ্ত হচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বিশ্বের প্রতিটি ভাষা সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় বক্তাগণ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। ভারতের রাষ্ট্রদূতসহ বক্তারা ভাষার সম্মান রক্ষায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং বহু সংস্কৃতিবাদ ও ভাষার অন্তর্ভুক্তির ওপর জোর দেন।

একুশের ব্যাপারে সম্যক অবহিত করা এবং নৃ-তাত্ত্বিক ভাষাসহ সব মাতৃভাষার সম্মানার্থে এই অস্থায়ী শহীদ মিনার ৩ দিনব্যাপী খোলা রাখা হয়েছে।

সকাল ৮টায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এ সময় দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করা হয়। এ ছাড়া নিজ নিজ ধর্মমত ও প্রথা মোতাবেক ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে মৌন প্রার্থনা এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসটির প্রথম প্রহরের অনুষ্ঠান শেষ হয়।

সন্ধ্যায় দেড় শতাধিক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ও অভিবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয় যাতে হাইকমিশনারসহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা শেষে ভাষা শহীদদের স্মরণে ও বাংলাদেশকে উপজীব্য করে স্থানীয় বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনায় এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে, একুশের চেতনা, তাৎপর্য, ইতিহাস বিষয়ে এবিসি রেডিও ক্যানবেরা আজ সকালে হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকীর লাইভ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এ সময় তিনি একুশের চেতনা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও সংস্কৃতির মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতি বছর বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরা গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

3h ago