ফেরাউনের রাজপ্রাসাদ

ছবি: সংগৃহীত

মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণে নীলনদ উপত্যকায় ঐতিহাসিক লোক্সর শহরে অবস্থিত ফেরাউনের রাজ প্রাসাদ ও উপাসনালয় 'কারনেক টেম্পল'।

কারনাক টেম্পল বা মন্দির মূলত কয়েকশ নিদর্শন নিয়ে গঠিত একটি টেম্পল কমপ্লেক্স। মিশরের প্রাচীন রাজধানী থিবস বা তেবশ। এটাই প্রাচীন মিশরের ফারাওদের রাজধানী শহর। পৃথিবীর প্রাচীন রাজধানী ম্যানুফেস বা মানাফের পরে থিবস রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পায়, যার আরও বেশ কিছু নাম রয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

আরেকটি নাম মাদিনাতুত তিবা এবং এই শহরে প্রবেশে চারদিকে ১০০টি প্রবেশদ্বার ছিল বিধায় এর আরেকটি নাম মাদিনাতু মিয়াতি বাবিন। অর্থাৎ ১০০ দরজার শহর। লোক্সর মূলত ইংরেজদের দেওয়া নাম। মিশরীয়রা এই শহরকে উকসুর নামে‌ ডাকে। এর অর্থ কসরুন, যার অর্থ রাজপ্রাসাদ। কসরের বহুবচন উকসুর। আর এই উকসুর শব্দটি ইংরেজিতে ভাষাগত পরিবর্তন হয়ে হয়েছে লোক্সর।

জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন কারনেক মন্দিরটির প্রথম নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল হযরত ইউসুফের (আ.) যুগে ফারাও রাজা চতুর্থ আমেন হোতেপ তথা আখনাতুনের হাত ধরে। যিনি একমাত্র ফারাও বাদশাহ আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছিলেন এবং একত্ববাদী স্রষ্টায় বিশ্বাস করতেন।

ছবি: সংগৃহীত

এই ঐতিহাসিক কারনাক টেম্পলটি অবকাঠামোগত পূর্ণতা পেয়েছিল ফারাও রাজা প্রথম থুতমোসের সময়। এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন বিখ্যাত ফারাও রানি হাপসেপসুট। প্রথম রামসিস ও তার পুত্র সেখানে হাইপোস্টাইল হল নির্মাণ করেন।

ফারাও দ্বিতীয় রামসিস আল-কুরআনে (ফেরাউন নামে যাকে নামকরণ করা হয়েছে) এর সময় এটার উন্নয়নে বিপ্লব সাধিত হয়। হযরত মুসার (আ.) সময়ে ফারাও রাজা ছিলেন 'রামসিসদ্য গ্রেট', যার স্ত্রী ছিলেন নিফারতারি, যিনি  ইসলামী পরিভাষায় হযরত আছিয়া (আ.) হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত।

ছবি: সংগৃহীত

এই কারনাক টেম্পল মূলত তৈরি হয়েছিল ফারাওদের সূর্য দেবতা আমুনরার উপাসনার জন্য। ফারাও রাজাদেরকে বিবেচনা করা হতো দেবতা আমুনের সন্তান হিসেবে। তাই দেবতার পাশাপাশি ফারাও রাজাদের উপাসনায় সাধারণ লোকজন তাদের পায়ে লুটিয়ে পড়ত।

ছবি: সংগৃহীত

সেই সময়ে ২৫০ জন পুরোহিত ও ৩০০ কর্মী এই মন্দিরে অবস্থান করত, যারা সর্বদা এখানে টেম্পলের নিরাপত্তায় ব্যস্ত থাকতো। প্রতিদিন শত শত কিলোমিটার পথ পাড়ি জমিয়ে উপাসকরা এখানে ভিড় জমাত। আশপাশের ৬০টি নুবিয়ান গ্রাম থেকে কর আদায় করে টেম্পলটি পরিচালনা করা হতো।‌

ছবি: সংগৃহীত

এখানে এত পরিমাণ রাজপ্রাসাদ, টেম্পল আর প্রাচীন ফারাও স্থাপনা যে, এই শহরের যে দিকেই যাবেন সেখানেই ঐতিহাসিক কোনো না কোনো নিদর্শন পাবেন। তাই এর নাম হয়েছে রাজ প্রাসাদের শহর।

ছবি: সংগৃহীত

খ্রিষ্টপূর্ব ১৯৯১ সালে থিবসে শুরু হয় সূর্য দেবতার কর্ণক মন্দিরের কাজ। খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বছর ধরে এর নির্মাণকাজ চললেও, এর সবচেয়ে বেশি সংস্কার হয়ে উনবিংশ রাজবংশের দ্বিতীয় রামেসিসের (বাইবেল ও কোরানে বর্ণিত ফেরাউন) সময়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Blood Moon 2025: Dhaka witnesses total lunar eclipse

Astronomy enthusiasts and skywatchers gathered on rooftops and open spaces to witness the rare spectacle

5h ago