২০২৫-২৬ অর্থবছর

বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া ১০ বিষয়

বাংলাদেশ বাজেট ২০২৫-২৬
অলঙ্করণ: আনোয়ার সোহেল/স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আদায় কম হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে অন্তর্বর্তী সরকার আসন্ন জাতীয় বাজেট ১০টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

আগামীকাল ২ জুন পেশ করতে যাওয়া বাজেটে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে সাড়ে ছয় শতাংশ। প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে সাড়ে পাঁচ শতাংশ।

আসন্ন বাজেটে উচ্চাভিলাষী কোনো লক্ষ্যমাত্রা থাকবে না। বাজেটের সার্বিক আকার হবে সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ কম। উন্নয়ন বাজেট ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ও রাজস্ব বাজেট ২৮ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে।

রাজস্বনীতির সঙ্গে মুদ্রানীতির সমন্বয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাজেটে সংস্কার কমিশন ও টাস্কফোর্স রিপোর্টের সুপারিশগুলো প্রতিফলিত হবে। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সহায়তা পেতে বাজেট ঘাটতি কমানো, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

রাজস্ব বাজেটের ৫৭ শতাংশ বেতন, ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে। শুধু ভাতা ও বেতন বাবদ ৮২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১০ থেকে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা চালু হতে পারে। এটি সরকারের খরচ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিদ্যুৎ ও সার খাতে ভর্তুকি এক লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন—আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী সরকার ধীরে ধীরে ভর্তুকি কমানোর পরিকল্পনা করছে। রাজস্ব বাজেটের প্রায় ২২ শতাংশ ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ থাকবে। সরকার পর্যায়ক্রমে এর পরিমাণ কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে।

রাজস্ব চাপ কমাতে সরকার বিদেশি ঋণের ওপর বেশি ঝুঁকবে। বিশেষ করে, বাজেট সহায়তার জন্য। বিদেশি ঋণ পরিশোধে ২০ থেকে ৩০ বছর সময় পাওয়া যায়। অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে সময় পাওয়া যায় পাঁচ বছর।

রাজস্ব আয় কম হলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা বা সামাজিক সুরক্ষায় খরচ বাড়ানোর সম্ভাবনা কম। তবুও, এই খাতগুলো সরকারের ১০ অগ্রাধিকারের মধ্যে আছে। বাজেটে কম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য ভর্তুকিসহ মূল সামাজিক কর্মসূচিগুলো কিছুটা বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে।

সরকারের ৫৮ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে শীর্ষ ১০ মন্ত্রণালয় পাবে দুই লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট খরচের প্রায় ৩৮ শতাংশ। এ খরচের সবচেয়ে বড় বরাদ্দ যাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে। এর আগে তালিকার শীর্ষে থাকা স্থানীয় সরকার বিভাগে এ বছর বরাদ্দ কমবে।

প্রতিরক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক কল্যাণে বরাদ্দ সামান্য কমতে পারে। স্বাস্থ্য পরিষেবা ও জননিরাপত্তায় বরাদ্দ সামান্য বাড়তে পারে। কৃষি ও সড়ক পরিবহনে বরাদ্দ আগের মতো থাকার সম্ভাবনা আছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন—বাজেটে মূল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় চার দশমিক ২৫ শতাংশ ও সংশোধিত প্রাক্কলনের তুলনায় আট দশমিক আট শতাংশ বাড়িয়ে পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এটি মূল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তিন দশমিক ৯৫ শতাংশ ও সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সাত দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।

রাজস্ব বাড়াতে সরকার কর সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে। এর মধ্যে আছে ১৫ শতাংশ অভিন্ন ভ্যাট হার চালু করা ও কর রিটার্ন দাখিলের জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এই ব্যবস্থার আধুনিকায়নের জন্য মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশলও নেওয়া হচ্ছে।

বাজেটে প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আছে ভ্যাট নিবন্ধনের নিয়ম কঠোর করা। করের পরিধি বাড়ানোর অংশ হিসেবে বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আগে এই সীমা ছিল তিন কোটি টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s body being taken to Manik Mia Avenue for janaza

Janaza will be held at Manik Mia Avenue at 2pm

2h ago

Farewell

10h ago