হ্যান্ডসেটের উৎপাদন বাড়লেও অনিশ্চয়তা কাটেনি

হ্যান্ডসেট, স্মার্টফোন, বিটিআরসি,
ফাইল ফটো

চলতি বছরের প্রথমার্ধে দেশে হ্যান্ডসেটের উৎপাদন বেড়েছে। কিন্তু উন্নত মডেলের স্মার্টফোনের চাহিদা কমায় হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারীরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

এদিকে জুলাই ও আগস্টে হ্যান্ডসেটের বিক্রি কমায় এই শিল্পের সঙ্গ জড়িতরা আশঙ্কাজনক পূর্বাভাস দিয়েছেন। অবশ্য এ সময় বিক্রি কমার কারণ ছিল দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ও কারফিউ জারি। কারণ এ সময় স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে পড়ে।

এছাড়া অতি সম্প্রতি, আকস্মিক বন্যায় দেশের পূর্বাঞ্চলের ১০-১১টি জেলা প্লাবিত হয়েছে, যা স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে হ্যান্ডসেট উৎপাদন বার্ষিক ৩৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ১ কোটি ৩৩ লাখে পৌঁছেছে।

তবে, উৎপাদিত হ্যান্ডসেটের তিন-চতুর্থাংশের বেশি ফিচার ফোন ছিল। মাত্র ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল স্মার্টফোন।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে দেশীয় হ্যান্ডসেট শিল্প সংকটে আছে।

কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছিল, ফলে ঋণপত্র খুলতে ব্যবসায়ীদের সমস্যায় পড়তে হয়।

এর মধ্যে কয়েক বছর ধরা চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে মানুষ ব্যয় কমাতে বাধ্য হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে স্মার্টফোনের বাজারে।

২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত স্মার্টফোন উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছিল।

তবে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় তারা ফিচার ফোনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে।

দেশে ২০১৭ সাল থেকে স্থানীয়ভাবে হ্যান্ডসেটের উৎপাদন শুরু হয়। এরপর ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো উৎপাদনের গতি কমে।

মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি) সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, 'শুধু পরিমাণেই পুরো চিত্র উঠে আসে না।'

তার ভাষ্য, 'আমরা বর্তমানে শুধু টিকে থাকার জন্য হ্যান্ডসেট বিক্রি করছি, কোনো লাভ করছি না। আমরা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি।'

'গ্রাহকরা আগের মতো ঘন ঘন হ্যান্ডসেট পরিবর্তন করছে না। অনেকে পুরনো বা ভাঙা ডিভাইস ব্যবহার করছে,' বলেন তিনি।

বছরের প্রথম ছয় মাস সাধারণত পিক সিজন, কারণ এই সময়ে দুটি ঈদ উৎসব থাকে, যা হ্যান্ডসেট বিক্রির জন্য ভালো সময়।

এমআইওবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে স্মার্টফোন বিক্রি ১৫ শতাংশ বেড়ে ৩৮ লাখে দাঁড়িয়েছে এবং ফিচার ফোন বিক্রি ৫ শতাংশের কিছু বেশি বেড়ে ৫১ লাখে দাঁড়িয়েছে।

এমআইওবির সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল হক বলেন, 'জুলাইয়ে বিক্ষোভের সময় মন্দা শুরু হয়। বর্তমানে আমরা বন্যার মুখে পড়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে বিক্রি আরও কমেছে। আমরা একটি চ্যালেঞ্জিং বছর দেখছি।'

এমআইওবির তথ্য অনুযায়ী, আরেকটি উল্লেখযোগ্য হুমকি হলো কালো বাজার বাড়ছে, দেশের হ্যান্ডসেট বাজারের প্রায় ৩৫ শতাংশ তাদের দখলে।

রেজওয়ানুল হক বলেন, 'অনেকেই অবৈধভাবে চোরাই পথে বাংলাদেশে আসা ফোন ব্যবহার করেন, যা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।'

তার ভাষ্য, 'যদিও মার্কিন ডলার সংকট কিছুটা কমেছে। তাই ঋণপত্র খোলা আগের চেয়ে সহজ হচ্ছে।'

'কিন্তু টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধি এই শিল্পে প্রভাব ফেলছে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Fugitives can’t run in national elections

The Election Commission has proposed stricter amendments to the election law, including a provision barring fugitives from contesting national polls.

9h ago