জীবনানন্দের হাঁসেরা

ছবি: মামুনুর রশীদ/স্টার

জীবনের ঐকান্তিক চাহিদার প্রতি যে অনলস অভিসার ছিল কবি জীবনানন্দ দাশের, তা তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন কলমীর দামে বিচরণশীল নিরীহ হাঁসের ভেতর। হাঁসেদের সহজ-সরল জীবনশৈলী কবির চোখে ধরা দিয়েছিল বিশেষ মাত্রায়।

এ জন্যই হয়তো জীবনানন্দ লাল পায়ে কিশোরীর ঘুঙুর বাঁধা হাঁস হতে চেয়েছিলেন। আর তার চিত্ররূপময় কবিতার অন্যতম রূপক বা অনুষঙ্গ হিসেবে বার বার এসেছে হাঁসের কথা।

জীবনানন্দ লেখেন, 'খইরঙা হাঁসটিরে নিয়ে যাবে যেন কোন কাহিনীর দেশে-/'পরাণ-কথার' গন্ধ লেগে আছে যেন তার নরম শরীরে,'।

গৃহপালিত হাঁসের সঙ্গে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনাচরণের অদ্ভুত এক মিল খুঁজে পেয়েছিলেন জীবনানন্দ। এ হাঁসেরা ডানা থাকলেও বুনোদের মতো উড়তে পারে না। ঠিক যেমন এ বিষয়টিই প্রতিভাত হয় মধ্যবিত্তের সাধ আর সাধ্যের মধ্যকার শূন্যতার ভেতর।

আবার প্রিয় নারীর সঙ্গে অকাল বিচ্ছেদে বিষণ্ন কবির আত্মকথনে উঠে আসে 'অমল' হাঁসের প্রসঙ্গ। তার 'সাতটি তারার তিমির' কাব্যগ্রন্থে 'হাঁস' শিরোনামের কবিতায় পাওয়া যায়, 'নয়টি হাঁসকে রোজ চোখ মেলে ভোরে/দেখা যায় জলপাই পল্লবের মতো স্নিগ্ধ জলে; তিনবার তিনগুণে নয় হয় পৃথিবীর পথে;'।

এদিকে আলোচ্য ছবিটির মতোই পানিতে ৩টি হাঁসকে খেলা করতে দেখে জীবনানন্দ লেখেন, 'তবুও জলের 'পরে রৌদ্র শেষ হলে/তিনটি নারীর মতো তিন জন হাঁস/নীরবে উঁচায়ে গলা স্থির হয় ছায়ার পিছনে'।

সম্প্রতি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের কামারঘোনা গ্রাম থেকে ছবিটি তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

Public Service Act: Ordinance out amid Secretariat protests

The government last night issued an ordinance allowing dismissal of public servants for administrative disruptions within 14 days and without departmental proceedings.

7h ago