রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিক্রি কমেছে

রিকন্ডিশন্ড গাড়ি, আমদানি, বিআরটিএ,
স্টার ফাইল ছবি

মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বাংলাদেশের বাজারে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি ও বিক্রি কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে, নতুন গাড়ির বাজার কিছুটা ভালো ছিল এবং বিক্রি কমলেও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কমেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫ হাজার ৯৯৫টি যাত্রীবাহী প্রাইভেট কার আমদানি করা হয়েছে। গত অর্থবছরে যা ছিল ৬ হাজার ৬০১টি।

এদিকে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য বলছে, গত বছরের তুলনায় প্রাইভেট কারের নিবন্ধন কমেছে ৩৬ শতাংশ। বিআরটিএতে এ বছর প্রতি মাসে ৮৯২টি যাত্রীবাহী প্রাইভেট কার নিবন্ধিত হয়েছে, যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৩৯১টি।

এইচএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, 'অর্থনীতি সংকটে থাকলেও সরকার অন্তত আমাদের গাড়ি আমদানির অনুমতি দিচ্ছে, যেন আমরা ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারি। কিন্তু, সবকিছুর ওপর শতভাগ মার্জিন দিতে হবে।'

তিনি জানান, গাড়ির ব্যবসা বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ও স্থিতিশীল অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। তাই বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স আসার বিষয়টি নিশ্চিত করতে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে।

রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের আরও ভালো প্রণোদনা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এটি দেশের ডলার সংকট বাড়াচ্ছে এবং অটোমোবাইল ব্যবসায় প্রভাব ফেলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারক ও ডিলার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিক্রির ধীরগতি ও ঋণপত্র (এলসি) খোলা নিয়ে তিনি সমস্যায় পড়েছেন।

তিনি বলেন, গাড়ি বিলাসী পণ্য, তাই এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত।

তিনি আরও বলেন, আগামী বছরও যদি এ অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে কিছু ডিলার দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।

হকস বে অটোমোবাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হক ডলার সংকটের কারণে আমদানি কমেছে উল্লেখ করে বলেন, 'ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে গাড়ির দাম বেড়েছে। একই সময়ে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি আমদানি শুল্কে প্রভাব ফেলেছে, ফলে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।'

তিনি বলেন, ল্যান্ড ক্রুজার বা পাজেরোর মতো উচ্চমূল্যের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি শুল্ক এক কোটি টাকার বেশি। মধ্যম ও কম দামি গাড়ির শুল্কও বেড়েছে। ফলে, এসব গাড়ি মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

তিনি দাম কমানো, বিক্রয় বৃদ্ধি এবং এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব বাড়াতে শুল্ক সমন্বয়ের পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশে সুজুকি গাড়ির একমাত্র পরিবেশক উত্তরা মোটরসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বিক্রি কমলেও ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির চাহিদা বাড়ছে।

তিনি বলেন, 'মানুষ রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দামে ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি পাচ্ছে। এটি রিকন্ডিশন্ড গাড়ির চেয়েও সস্তা হতে পারে, কারণ গ্রাহকদের প্রথম পাঁচ বছরের জন্য ফিটনেস সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় না।'

তার মতে, গত পাঁচ বছরে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার শেয়ার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ শতাংশ হয়েছে।

তিনি জানান, বাজারে অংশীদারিত্ব বাড়াতে সুজুকির জনপ্রিয় মডেলের গাড়িগুলো তুলনামূলক কম দামে ও কম সময়ের মধ্যে সরবরাহে তারা বাংলাদেশে একটি অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট স্থাপনের কথা ভাবছে।

রানার গ্রুপ ও বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মতো দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা হুন্দাই ও মালয়েশিয়ার প্রোটন ইতোমধ্যে এ ধরনের উদ্যোগে বিনিয়োগ করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়াসহ চার চাকার গাড়ি উৎপাদনে আরও অন্তত ছয়টি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের পাইপলাইনে আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

2h ago