ডলার সংকটে এলপি গ্যাসের আমদানি কমেছে

এলপি গ্যাস
এলপিজি খাত বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ভুগছে। ছবি: হাবিবুর রহামন/স্টার

চলমান ডলার সংকটের মধ্যে এলসি খুলতে সমস্যা হওয়ায় তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) আমদানি কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা জানান, গত জুলাই থেকে প্রতি মাসে এলপিজি আমদানি এক লাখ ৪০ হাজার টন থেকে কমে প্রায় এক লাখ টন হয়েছে।

বর্তমানে দেশে এলপিজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১৪ লাখ টন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এই চাহিদার মাত্র দুই শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় বাকি ৯৮ শতাংশ আমদানি করতে হয়।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, চলমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে গ্রামীণ এলাকা ও শিল্পকারখানায় এলপিজির চাহিদা কমে যাওয়ায় এই ঘাটতি পূরণের আশা করা হচ্ছে।

বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের নির্বাহী পরিচালক জাকারিয়া জালাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলসি সমস্যার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে এলপিজি আমদানি করতে না পারায় এর ব্যবসা নিম্নমুখী হচ্ছে।'

তিনি জানান, এই খাতটি বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ভুগছে।

ডেল্টা এলপিজির পরিচালক সমীর হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত চার মাসে এলপিজি আমদানি প্রতি মাসে গড়ে এক লাখ টনে নেমে এসেছে। গত জুলাইয়ের আগে তা ছিল এক লাখ ৩০ হাজার থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমদানি কমে যাওয়ায় এলপিজির সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হয়েছে।'

তবে ওমেরা এলপিজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তানজিম চৌধুরী ডেইলি বলেন, 'ব্যাংকগুলোর সহায়তায় আমাদের প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত এলপিজি আমদানি করতে পেরেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এলপিজি দেশের জন্য অপরিহার্য পণ্য হওয়ায় স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তাদের ব্যবসা চালাতে অসুবিধায় না পড়ে সেজন্য আমরা তাদেরকে এলপিজি সরবরাহ করছি।'

বেক্সিমকো এলপিজির চিফ কমার্শিয়াল অফিসার এম মুনতাসির আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের উচিত এলপিজি সিলিন্ডারের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা, যাতে গ্রাহকদের অতিরিক্ত খরচ করতে না হয় এবং মধ্যস্বত্বভোগীরাও ন্যূনতম মুনাফা করতে পারেন।'

খুচরা বিক্রেতা ও প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, এলপিজি আমদানি কমে যাওয়ায় এর দামে কোনো প্রভাব পড়েনি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমদানি কমে গেলেও তাৎক্ষণিক সরবরাহ ঘাটতির সম্ভাবনা নেই।'

সরবরাহ শৃঙ্খল স্বাভাবিক রাখতে বিইআরসি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'ব্যবসার জন্য পর্যাপ্ত এলপিজি মজুদ ছিল।'

নুরুল আমিন জানান, বিইআরসি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করে। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা প্রতিটি ১২ কেজি সিলিন্ডার থেকে যথাক্রমে ৩৫ টাকা ও ৫০ টাকা মুনাফা করে।

তিনি বলেন, 'সবার জন্য মুনাফা নিশ্চিত করতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এলপিজির এই দামের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

রাজধানীর উত্তরার এলপিজি সিলিন্ডার খুচরা বিক্রেতা ওমর ফারুক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিইআরসির দামে আমরা প্রতিষ্ঠান ও ডিলারদের কাছ থেকে এলপিজি কিনতে পারি না।'

কেউ কেউ বিইআরসির নির্ধারিত দামের তুলনায় ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেশি নিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, 'দোকান ভাড়ার খরচ মেটাতে ও মুনাফা নিশ্চিত করতে কেনা দামের চেয়ে প্রায় ৮০ টাকা বেশি দামে এলপিজি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Ignore Gen Z at your peril, experts tell government

Prominent personalities warn government and parties not to dismiss the demands of youths

39m ago