রাজস্ব কমায় উচ্চ ঋণ বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে

ঋণ-জিডিপি অনুপাত, রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, আইএমএফ, জিডিপি,

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপি অনুপাত ৪০ শতাংশ অতিক্রম করতে যাচ্ছে। কারণ রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ায় সরকার তথবিল সংগ্রহে ঋণ নেওয়া অব্যাহত রেখেছে।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি আর্থিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঋণ-জিডিপি অনুপাত ছিল ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে তা ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

গত এক দশকে ঋণ-জিডিপি অনুপাত ১৩ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট বেড়েছে। আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৯ অর্থবছর শেষে এই অনুপাত ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছাবে।

আইএমএফের মতে, এই অনুপাত ৫৫ শতাংশের নিচে রাখা কম ঝুঁকিপূর্ণ।

তবে স্থানীয় অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজস্ব প্রবৃদ্ধি না বাড়লে ও চলমান মার্কিন ডলার সংকট বজায় থাকলে এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

এদিকে ক্রমবর্ধমান ঋণের কারণে বাংলাদেশের জন্য সুদ পরিশোধের ব্যয় বাড়ছে।

বাংলাদেশের জন্য প্রতি বছর ঋণের বোঝা বাড়লেও রাজস্ব আয় কম হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

গত এক দশকে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি অর্থবছরে এটি ৮ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২৯ অর্থবছরে ১০ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হবে।

বাংলাদেশের তুলনায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ঋণ-জিডিপির অনুপাত বেশি হলেও তাদের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত বেশি।

ভারতে ঋণ-জিডিপি অনুপাত ২০২৪ অর্থবছরে দাঁড়াবে ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৮২ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২৩ অর্থবছরে দেশটির রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ছিল ২০ দশমিক ২ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান ঋণ-জিডিপি অনুপাতকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা যাবে কিনা তা নির্ভর করছে ঋণের সঙ্গে জিডিপি কীভাবে বাড়ছে, রাজস্ব কীভাবে বাড়ছে এবং বিদেশি মুদ্রা প্রাপ্তির ওপর।

তিনি জানান, দেশের রাজস্ব আয় কমবেশি স্থবির হয়ে আছে এবং গত দেড় বছর ধরে মার্কিন ডলারের সংকট চলছে। তাই জিডিপি বাড়লেও ঋণ পরিশোধে কিছুটা চাপ তৈরি হতে পারে। রাজস্ব আয় যেহেতু বেশি হারে বাড়ছে না, তাই বাজেট ঘাটতি মেটাতে দেশকে ঋণ নিতে হচ্ছে।

উচ্চ ঋণের ঝুঁকি কমাতে রাজস্ব আয় বাড়ানো ও অপব্যয় কমানোর পরামর্শ দেন জাহিদ হোসেন।

৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৯২ কোটি টাকা এবং বাইরের ঋণ ৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

২০২৪ অর্থবছরের সুদ পরিশোধে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সরকার। এর মধ্যে অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যয় হয়েছে ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ।

অর্থ বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার ২২৩ কোটি টাকা, যা ২০২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ছিল ৩৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা।

Comments

The Daily Star  | English
foreign travel rules for government officials Bangladesh

Advisers, secretaries flouting foreign travel rules

CA upset over repeated violations; officials urged to follow directives ahead of election

1h ago