বাচ্চাগুলোর খবর শুনে সারারাত ঘুমাতে পারিনি: কুমার বিশ্বজিৎ

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে বই, ব্যাগ ও জামাসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

কুমার বিশ্বজিৎ একজন নন্দিত সংগীতশিল্পী। দশকের পর দশক ধরে তিনি গান করে আসছেন। দেশে-বিদেশে রয়েছে তার সুনাম। তার কিছু গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত এই গায়ক বর্তমানে আছেন কানাডায়। সেখান থেকে টেলিফোনে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, আমার বাসা উত্তরায়। যদিও এখন দেশের বাইরে আছি, কিন্তু দেশে থাকার সময় প্রতিদিন মাইলস্টোন স্কুলের বাচ্চাদের দেখতাম। আমার বাসার কাছেই ওদের একটা ক্যাম্পাস আছে। সকালে পবিত্র মুখগুলো দেখে মনটা ভরে যেত। অনেক দিন মুখগুলো দেখি না!

'কানাডায় বসে মাইলস্টোনের দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। বাচ্চাগুলোর খবর শুনে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। ঘুম চলে গেছে। জীবনের কিছু সময় আসে, কিছু মুহূর্ত আসে, যা কারও জীবনে না আসাটাই ভালো। হারানোর ব্যথা সবচেয়ে বড় ব্যথা।'

এই সংগীতশিল্পী আরও বলেন, আমি তো একজন বাবা। আমার সন্তানকে দিয়ে বুঝি, যারা চিরতরে সন্তান হারিয়েছেন তাদের কেমন লাগছে। দুনিয়ার কেউই তাদের সান্ত্বনা দিতে পারবে না। সান্ত্বনা দিয়েও কোনো লাভ হবে না। বুকের মধ্যে ব্যথা রয়ে যাবে। বুকের মধ্যে ক্ষত রয়ে যাবে চিরদিন।

'মৃত্যুকে আমি কাছ থেকে দেখছি। কাজেই, যারা ছোট ছোট ফুলের মতো বাচ্চাদের হারিয়েছেন, তাদের যে কী কষ্ট হচ্ছে, এর উপলব্ধি মা-বাবাই জানেন। বাবা-মার কাছে সন্তানই সব। সন্তানের জন্য তারা সব করেন। এই যে এতকিছু করা, এত পরিশ্রম, এত কষ্ট, সবকিছু সন্তানের জন্য। সেই সন্তান যদি না থাকে, তাহলে জীবনের মানে কী?'

কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, যে বয়সে মাইলস্টোন স্কুলের বাচ্চাগুলো চলে গেল, এই বয়সটা তো মধুর ছেলেবেলার বয়স। এই বয়সে বাচ্চাদেরকে বাবা-মা বেশি আদর করেন, বেশি ভালোবাসেন। এই বয়সে সকালে বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আসতে হয়, টিফিন দিতে হয়। বাবা-মার হাত ধরে এই বয়সী বাচ্চারা স্কুলে যায়। যাদের হারিয়েছে, তারা তো এখন সব হারালো! স্মৃতি ছাড়া কী থাকল আর? স্মৃতি নিয়ে বাকি জীবন কাটাতে হবে। কিন্তু, চোখের পানি তো ঝরতেই থাকবে।

'কেউ কেউ ভাবতে পারেন, চাইলেই ভুলে যাওয়া সম্ভব। আসলে তা নয়। হারানোর বেদনা ভুলে যাওয়া সম্ভব না। প্রতিনিয়ত মনে পড়বে। প্রতিনিয়ত হাহাকার করে উঠবে বুকের ভেতর। কানাডায় বসে খবরটি পাওয়ার পর আমার বুকটাও হাহাকার করছিল। আমার স্ত্রীকে খবরটি দিইনি। ওর শরীর ভালো না। এমন দুঃসংবাদ নিতে পারবে না। দেশ থেকে ফোন এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জেনেছি। শিশুগুলো তো ফুলের মতো পবিত্র। ওদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s janaza held

The namaz-e-janaza of BNP Chairperson Khaleda Zia was held at the South Plaza of the Jatiya Sangsad Bhaban today

6h ago