কমতে কমতে ৫০, কেন একের পর এক বন্ধ হচ্ছে সিনেমা হল

দেশে সচল সিনেমা হল কমতে কমতে মাত্র ৫০টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। অথচ পাঁচ বছর আগেও সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ২৫০।
সম্প্রতি নড়াইলে ছয়টি সিনেমা হল বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া বগুড়ায় বন্ধ হয়েছে 'মধুবন সিনেপ্লেক্স'।
বন্ধ হওয়ার পথে মানিকগঞ্জের 'নবীনা', ময়মনসিংহের 'ছায়াবানী', সিলেটের 'নন্দিতা' ও রংপুরের 'শাপলা'। যশোরে 'মণিহার' সিনেপ্লেক্স চালু থাকলেও অন্য সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
নব্বই দশকে সারা দেশে এক হাজার ৪৩৫টির মতো সিনেমা হল সচল ছিল। এখন দেশের অনেক জেলা শহরে কোনো সচল সিনেমা হলই নেই। বরগুনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, নড়াইল, নাটোর, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, পঞ্চগড়, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, চুয়াডাঙ্গা, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ দেশের ২৫ জেলায় বর্তমানে সচল কোনো সিনেমা হল নেই।
প্রযোজক, পরিবেশক ও প্রদর্শক সমিতির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সাল পর্যন্ত টাঙ্গাইলে ৪৭টি সিনেমা হল থাকলেও এখন সেখানে মাত্র ছয়টি হল সচল রয়েছে। যশোরে ২১টি সিনেমা হল থাকলেও এখন মাত্র তিনটি সিনেমা হল চালু রয়েছে। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ জেলার ৩১টি সিনেমা হলের মধ্যে এখন রয়েছে মাত্র তিনটি।
একই চিত্র রাজধানী ঢাকায়ও। গুলিস্তানের 'নাজ', 'মুন', 'মুকুল', সদরঘাটের 'রূপমহল', আরমানিটোলার 'শাবিস্থান', পোস্তগোলার 'ডায়না', কারওয়ান বাজার এলাকার 'পূর্ণিমা' ও কাকরাইলের 'রাজমণি' ও 'রাজিয়া' পুরান ঢাকায় 'অভিসার', নিউমার্কেট এলাকার 'বলাকা' সিনেমা হলও বন্ধ হয়ে গেছে।
'মধুমিতা' হলের কর্নধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভালো মানের গল্প নিয়ে সিনেমা বানাতে হবে। যাদের ছবি চলে, সেই পরিচালকদের ছবি সরকারিভাবে প্রযোজনার ব্যবস্থা করতে হবে। আমার বিশ্বাস, এমনটি হলে সিনেমা হল সচল হবে।'
তিনি বলেন, 'অনেক সিনেমা হল, কিন্তু ভালো সিনেমা নেই, তাহলে তো হবে না। আমাদের এখানে ঈদে শুধু বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি পায়। এখান থেকে বের হয়ে এসে অন্য সময়েও ছবি মুক্তি দিতে হবে।'
সিনেমা প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের এখানে শুধু ঈদের উৎসবে সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। সেই কারণে দুই ঈদেই শুধু বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রযোজিত শাকিব খান অভিনীত "বরবাদ" সিনেমাও ঈদে মুক্তি পেয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে সারা বছর ছবি মুক্তির বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।'
তিনি বলেন, 'দর্শকদের কীভাবে হলমুখী করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে। সিনেমা ব্যবসা নিয়ে হল মালিক, সিনেপ্লেক্সের আরও স্বচ্ছ থাকতে হবে। আমি এখনো অনেক হলের টাকা ঠিকমতো বুঝে পাইনি। এমন হলে সিনেমার প্রযোজকরা সিনেমা বানাতে উৎসাহ হারাবেন। এসব নিয়ে ভাবতে হবে।'
Comments