আমি অন্য তারকা সন্তানের মতো নই: মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে নমশি

মিঠুন চক্রবর্তী ও তার ছোট ছেলে নমশি চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত

মিঠুন চক্রবর্তীর ছোট ছেলে নমশি চক্রবর্তী দাবি করেছেন, তিনি আসলে 'বলিউড কিড' নন, কারণ তিনি মুম্বাইয়ে বড় হননি এবং তার স্কুলজীবনে বন্ধুদের মধ্যে কোনো তারকা সন্তানও ছিল না।

মিঠুন চক্রবর্তী প্রায় অর্ধশতাব্দীর ক্যারিয়ারে নিজেকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে নিজেকে একজন সেরা অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে তার দুই ছেলে মিমোহ চক্রবর্তী ও নমশি চক্রবর্তী এখনো চলচ্চিত্রজগতে নিজেদের জায়গা খুঁজছেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমবারের মতো বাবা-ছেলে একসঙ্গে একই ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। বিবেক অগ্নিহোত্রীর রাজনৈতিক সিনেমা দ্য বেঙ্গল ফাইলস-এ তারা অভিনয় করবেন। যদিও এই সিনেমাতে তাদের একই দৃশ্যে দেখা যাবে না।

নমশি বললেন, 'আমি কেবল মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে নই, আমি যোগিতা বালির ছেলেও। সবাই সাধারণত বাবার কথা বলে, কিন্তু আমার মা-ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন।'

যোগিতা বালি ১৯৭১ সালে পরওয়ানা সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়ে আসেন এবং প্রায় দুই দশক কাজ করার পর ১৯৮৯ সালে আখরি বদলা সিনেমার পর অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ান। ১৯৭৯ সালে তিনি মিঠুন চক্রবর্তীকে বিয়ে করেন, এর আগে তিনি কিংবদন্তি গায়ক-অভিনেতা কিশোর কুমারকে বিয়ে করেছিলেন।

নমশি বলেন, 'আমি মনে করি না, আমরা তারকা সন্তানেরা কোনো চাপ নেই না। তবে মানুষ সবসময় আমাদের নিয়ে কিছুটা ভিন্ন ধারণা পোষণ করেন, কারণ আমার বাবা তার সময়ে সুপারস্টার ছিলেন। আজও তিনি কাজ করছেন। তিনি একজন কিংবদন্তি। সেই উত্তরাধিকার ধরে রাখতে হলে, শুধু প্রতিভা নয়, বিশেষ ভাগ্যেরও প্রয়োজন। আমার বাবা ৪৮ বছর ধরে অভিনয় করছেন। একজন নবাগতকে কখনো একজন কিংবদন্তির সঙ্গে তুলনা করা যায় না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি ভালো ও ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যেতে চাই। নইলে আমাকে সব সময় 'তারকা সন্তান' মনে করিয়ে দেওয়া হবে এবং বারবার প্রত্যাখ্যাত হতে হবে। দেখুন, অক্ষয় খান্নাকেও তো কেউ 'বিনোদ খান্নার ছেলে' বলে না, কারণ তিনি নিজে অসাধারণ অভিনেতা। এমন আরও অনেক উদাহরণ আছে—রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট, সানি দেওল, ববি দেওল। শেষ পর্যন্ত আসল কথা হলো প্রতিভা।'

নমশির দাবি, তার পথচলা অন্য তারকা সন্তানদের মতো নয়। তার ভাষ্য, 'আমি যে সিনেমাগুলো পেয়েছি, তা নিজের চেষ্টায়। কারও সুপারিশে নয়। আমি কারও ওপর দোষ চাপাই না, অভিযোগও করি না। আমি সবসময়ই চেয়েছি নিজের যোগ্যতায় কাজ পেতে। আমি ভীষণ স্বাধীনচেতা মানুষ।'

'আমি আরাম নগরে (আন্ধেরি ওয়েস্ট, মুম্বাইয়ের এলাকা) ডজনখানেক অডিশন দিয়েছি, যেখানে কেউ জানতই না আমি কে। অসংখ্যবার আমাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আমি কখনও বাবার নাম বলে লাইনে আগে দাঁড়াইনি। আমি ছিলাম সাধারণ, যে এই শহরে কাজ খুঁজছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমার ভেতরে সেই পাগলামি ছিল।'

নমশি আরও জানালেন, তিনি বেড়ে উঠেছেন মুম্বাইয়ের চেয়ে আলাদা পরিবেশে।

'আমরা ১৯৯৪ সালে উটির উদ্দেশ্যে রওনা হই, তখন আমার বয়স মাত্র দুই। জীবনের প্রথম ১২ বছর আমি মুম্বাইতে ছিলাম না। তাই আমি আসলে 'বলিউড শিশু' নই। আমি তামিলনাড়ুতে বেড়ে উঠেছি। ২০১৫ সালে, যখন আমার বয়স ১৫, তখন মুম্বাইয়ে ফিরি। তখন আমার তারকা সন্তান বন্ধু ছিল না, মুম্বাই সম্পর্কেও তেমন কিছু জানতাম না। আমার বেড়ে ওঠা ছিল একেবারেই আলাদা।'

মূলত ১৯৯৪ সালে মিঠুন চক্রবর্তী একের পর এক সিনেমা ব্যর্থ হওয়ায় পরিবার নিয়ে উটিতে চলে যান। সেখানে তিনি হোটেল ব্যবসা শুরু করেন, পাশাপাশি সিনেমায় কাজ চালিয়ে যান।

নমশি বললেন, 'বাবাও তখন বেশ আলাদা ছিলেন। তিনি নিজের ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন। তাই যখন আমরা মুম্বাইয়ে ফিরলাম, তখন অন্যদের ফোন করে সুযোগ চাইনি। আমাদের নতুন করে শুরু করতে হয়েছিল।'

তিনি জানান, তিনি সবসময় অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন, অন্য কোনো পরিকল্পনা ছিল না।

'তাই থিয়েটার করেছি, স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করেছি, ইমপ্রোভাইজেশন করেছি। আমি নিজেকে এক ঘরানার মধ্যে আটকে রাখিনি।'

নমশি ২০২৩ সালে রাজকুমার সান্তোষির রোমান্টিক কমেডি ব্যাড বয় দিয়ে পর্দায় পা রাখেন। এবার তিনি খলনায়ক হিসেবে দেখা দেবেন দ্য বেঙ্গল ফাইলস সিনেমাতে। সিনেমাটি মুক্তি পাবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর।

Comments

The Daily Star  | English

ACC to get power to probe corruption by Bangladeshis anywhere, foreigners in Bangladesh

The Anti-Corruption Commission (ACC) is set to receive sweeping new powers under a proposed ordinance that will allow it to investigate corruption by Bangladeshi citizens, both at home and abroad, as well as by foreign nationals residing in the country. .The draft Anti-Corruption Commissio

28m ago