গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি

৩ দিন হলো এভাবেই বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াগুলো

৩ দিন হলো এভাবেই বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াগুলো
ঘোড়াগুলো গত ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে একটানা বন্যার ঠান্ডা পানিতে দাঁড়িয়ে আছে | ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে যাওয়ায় গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে গতকাল পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় আরও বেড়ে ৮৯ সেন্টিমিটার উপরে উঠে যায়।

পানির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। গতকাল গাইবান্ধা সদর উপজেলা, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় ১৭ হাজার ৮২০ মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। শুক্রবার নতুন করে ১১ হাজার ১০৮ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

৩ দিন হলো এভাবেই বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াগুলো
বন্যায় ডুবে গেছে ঘর-বাড়ি | ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

গত চার দিন ধরে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় মানুষের পাশাপাশি ভোগান্তি বেড়েছে গৃহপালিত পশু-পাখির।

ছবিতে যে ঘোড়াগুলো দেখা যাচ্ছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের খারজানী চরে গত ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে একটানা বন্যার ঠান্ডা পানিতে দাঁড়িয়ে আছে।

৩ দিন হলো এভাবেই বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াগুলো
বাড়ি-ঘর, আসবাবপত্র নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পরে ঘোড়াগুলোকেও সরানো হবে | ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

খারজানী চর গত তিন দিন ধরে ভাঙনের কবলে। ইতোমধ্যে এই চরের ১০০ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভাঙনের আশঙ্কায় শতাধিক পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি আসবাবপত্র নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

চরের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, ঘোড়ার মালিক নিজেদের জানমালের নিরাপত্তায় ব্যস্ত থাকায় ঘোড়াগুলোকে গত তিন দিন হলো এভাবেই রাখা হয়েছে। এখানেই দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ঘোড়াগুলো বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ি-ঘর, আসবাবপত্র নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পরে ঘোড়াগুলোকেও সরানো হবে।'

চরের আরেক বাসিন্দা ফজল হক বলেন, 'গত মঙ্গলবার রাত থেকে এই চরে পানি উঠতে শুরু করে। সেই থেকে ঘোড়াগুলো নদীর পানি এবং শন খেয়েই আছে। বাড়ি-ঘর টানতে (সরিয়ে নিতে) মানুষেরই রান্না-খাওয়া নেই। অনেক কষ্টে আছি আমরা।'

৩ দিন হলো এভাবেই বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াগুলো
ঘোড়াগুলো নদীর পানি ও শন খেয়ে আছে | ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বন্যা কবলিত এলাকা ঘরে দেখা গেছে, গাইবান্ধার চরাঞ্চলের প্রায় সব টিউবওয়েল পানিতে ডুবে যাওয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।

ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া চরের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম বলেন, ঘরের ভেতরে পানি উঠে যাওয়ায় রান্না করা অনেক কষ্ট হচ্ছে। শুকনো খাবার আর পানি যদি এই সময় কেউ আমাদের দিতো, তাহলে অনেক উপকার হতো।

৩ দিন হলো এভাবেই বন্যার পানিতে দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়াগুলো
ঘর-বাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বন্যা কবলিত মানুষ | ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত চার উপজেলায় তিন হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৬৫ টন জিআর (খাদ্য ও অর্থ সহায়তা) চাল  উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu election sees spontaneous turnout of voters

Ducsu election is being held at eight centres of the campus with nearly 40,000 registered voters and 471 candidates vying for 28 central posts.

44m ago