উৎপাদন বিবেচনায় দেশে ১১ বছর ব্যবহারের গ্যাস আছে: নসরুল হামিদ

নসরুল হামিদ
নসরুল হামিদ। ফাইল ছবি

দেশে বর্তমানে দৈনিক গড়ে ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে এবং এ বিবেচনায় অবশিষ্ট গ্যাস আগামী ১০ দশমিক ৮ বছর ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন। 

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

এ সময় নসরুল হামিদ বলেন, 'সর্বশেষ গত ১ জুলাইয়ের প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশে উত্তোলনযোগ্য প্রমাণিত ও সম্ভাব্য গ্যাস মজুদের পরিমাণ ২৮ দশমিক ৫৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস উৎপাদনের শুরু থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ১৯ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।'

'বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য অবশিষ্ট মজুদ আছে ৯ দশমিক ০৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাস ক্ষেত্র থেকে বর্তমানে দৈনিক গড়ে ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হয়। এ বিবেচনায় অবশিষ্ট গ্যাস ১০ দশমিক ৮ বছর ব্যবহার করা সম্ভব হবে,' বলেন তিনি।

সংসদ সদস্য কাজী নাজিম উদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে ৮টি গ্রাহক শ্রেণিতে সংযোগকৃত অনুমোদিত গ্যাস লোড অনুযায়ী চাহিদা দৈনিক গড়ে ৩ হাজার ৭০০ ঘনফুট। এর বিপরীতে দৈনিক উৎপাদন গড়ে ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। 

অবকাঠামোগত সক্ষমতা থাকলেও বৈশ্বিক সংকটে দৈনিক কমবেশি ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট সমপরিমাণ এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, গ্রাহকদের চাহিদার বিপরীতে গ্যাস সংকটের পরিমাণ দৈনিক গড়ে প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।

সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, '২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে ২৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে।'

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, ডিজেল বিক্রয়ে বিপিসি লিটারপ্রতি ২১ টাকা লোকসান দিচ্ছে। ভবিষ্যতে যখনই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমবে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমানা আলীর প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে গত ৩ মেয়াদে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ৯৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে গ্রিড, অফগ্রিড ও ক্যাপটিভসহ মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৭৩০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে।

'বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুৎ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এই খাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ফলে ইতোমধ্যে শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে,' বলেন তিনি।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, 'রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশগুলো জ্বালানি সংকটে আছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতও এর বাইরে নয়। বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে বাংলাদেশ বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার ও পরিকল্পিত লোডশেডিং করার মাধ্যমে সংকট উত্তরণের চেষ্টায় আছে।'

তিনি বলেন, 'পরিকল্পনা অনুযায়ী কয়লাভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গ্রিডে যুক্ত হওয়াসহ সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে অচিরেই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Pharmaceutical raw material import dependency Bangladesh

Heavy import reliance leaves pharma industry vulnerable

Despite success, Bangladesh's pharma industry hinges on imported raw materials

14h ago