‘স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস আমদানি করতে দাম বাড়ানো হয়েছে’

বিদ্যুতের পর এবার সরকারের নির্বাহী আদেশে শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সরকার বলেছে, বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছিল। এ কারণে গত বছরের আগস্ট থেকে স্পট মার্কেটে এলএনজি কেনা বন্ধ আছে। কিন্তু চলমান সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান, গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বাড়তি চাহিদা মেটানো এবং শিল্প খাতে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বাড়তি গ্যাস লাগবে। এই চাহিদা পূরণ করা হবে স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে। এ কারণেই বিদ্যুৎ, শিল্প, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।

গ্যাসের দাম বাড়িয়ে আজ বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এতে দেখা যায় — বৃহৎ, মাঝারি এবং ক্ষুদ্র, কুটির ও অন্যান্য শিল্পে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ইউনিটপ্রতি ৩০ টাকা করা হয়েছে। এসব খাতে ইউনিটপ্রতি গ্যাসের দাম ছিল যথাক্রমে ১১ টাকা ৯৮ পয়সা, ১১ টাকা ৭৮ পয়সা ও ১০ টাকা ৭৮ পয়সা। অর্থাৎ, দাম বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।

সরকারি, আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য গ্যাসের পূর্ব মূল্য ছিল প্রতি ইউনিটে ৫ টাকা ২ পয়সা। ৮ টাকা ৯৮ পয়সা বাড়িয়ে এর বর্তমান মূল্য করা হয়েছে ১৪ টাকা।

ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট, স্মল পাওয়ার প্লান্ট ও বাণিজ্যিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ছিল ১৬ টাকা, যা ১৪ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।

এ ছাড়া, হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ছিল ২৬ টাকা ৬৪ পয়সা, যা ৩ টাকা ৮৬ পয়সা বাড়িয়ে ৩০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে।

নতুন দাম ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। তবে গৃহস্থালি, সিএনজি, চা-শিল্প (চা-বাগান) ও সার উৎপাদনে গ্যাসের দাম বাড়ায়নি সরকার।

দাম বাড়ানোর ব্যাপারে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ বলেছে, বর্তমান বৈশ্বিক বিশেষ জ্বালানি পরিস্থিতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী সব জ্বালানির মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এছাড়া, জ্বালানি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয়, যেমন: বিমা খরচ, ঝুঁকি ব্যয়, ব্যাংক সুদ, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকা দুর্বল হওয়ায় সামগ্রিকভাবে জ্বালানি খাতে ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে স্পট মার্কেট থেকে আমদানি বন্ধ করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ও শিল্পসহ সকল খাতে গ্যাস রেশনিং করা হচ্ছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

1h ago